পুকুরের জল করে টলমল
মন করে আনচান,
আঁখি দিয়ে শুধু পরশিয়া তোরে
শুকায় আমার প্রাণ।
সুকোমল তোর চপলতা ভরা
নোলক-কাঁকন বাজে,
হৃদয়ে আমার, পরাণে আমার
প্রতিটি সকাল-সাঁঝে।
কত কথা ছিল…কত সুর ছিল
এক্কাদোক্কা খেলা,
আমে কাঁঠালেতে,জুৃঁই মালতিতে
পার হয়ে যেত বেলা।
তোর খোঁপা আমি সাজাতেম ফুলে
তুই মোর আঁখি কাজলে,
পিঠা পরবেতে ছিল উৎসব,
হাসি প্রাণ পেত বাদলে…
মান-অভিমানে তুই মোর সনে
ওষ্ঠ রাঙায়ে সারা
হতিস যখন,দুই হাতে তোর
অশ্রুর সে কিনারা
দিতেম যে ছুঁয়ে, পড়ত যে ভুঁয়ে
শিউলি ঝরত অকালে,
কালবৈশাখী গর্জালে রোষে
মেঘের পানে তে তাকালে
আজও দেখি সেই মেঘবালিকারে
পায়ে মল রিনিঝিনি
কেশরাশি তার,কি তার বাহার
মনে বাজে কিঙ্কিনী…
আজও খুঁজে ফিরি,বারেক যে ফিরি
থাকি বসে নদীঘাটে,
আজও হাতে তোর যক্ষের ধন
আগলাই ঘাটেমাঠে…
ডাগর দুচোখ-ঘনকেশ সেই
রাখাল ছেলেটি গোপনে,
দিয়ে গেছে তার আদর-সোহাগ
নিঃস্ব করেছে যতনে
ছিল যত তার অনুরাগ-প্রাণ
উপুড় করেছে ডালি,
চিঠি হয়ে আছে শিখা হয়ে বেঁচে
সব শুনশান…খালি…
পণপ্রথা আর যৌতুক তোর
গলায় হয়েছে রশি,
আজও খোঁজে তোরে,হাতড়ায় ফিরে
রাখাল ছেলের বাঁশী…
আছে বাঁশী,শুধু নেই প্রাণ
যায় বেজে শুধু প্রেম-সুর…
দুই দেহ-দুই মন যে বিলীন
সোহাগ যে সুমধুর…
খুঁজে ফিরি ঘাসে,খুঁজি যে বাতাসে
এ চিঠির নিষ্কৃতি
ঠিক ঠিকানায় ফেলবে রানার
জ্বালাবেই প্রেমবাতি…