অগুন্তি শবদেহের মাঝে দাঁড়িয়ে এক সৈনিক,
ক্ষত-বিক্ষত দেহ , শত্রুর আঘাত তাকে ততটা বিচলিত করেনি যা করে গেছে তার সহযোদ্ধাদের নীরব প্রস্থান ।
তার মনে হচ্ছে তারা যেন স্বেচ্ছামৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে চলে যাবার অছিলায়।
অস্ত্র , রসদ তার শেষ , রক্তাক্ত দেহ বিশ্রাম চাইছে,
চাইছে চিকিৎসকের স্পর্শ , যুদ্ধক্ষেত্রে সবই অমিল।
তবুও সে লড়তে চায় , চায় বিজয়ী হয়ে ফিরে আসতে , ইচ্ছে থাকলেও প্রতিবন্ধকতা যেন মহাসাগর।
নিঃসঙ্গতা ধীরে ধীরে গ্রাস করছে তাকে ।
সে একসময় শুনেছিল যুদ্ধের ময়দানে আহত সিংহের থেকে সচল ঘোড়া মূল্যবান, তবে কি সে সেই আহত সিংহ ? নখদন্তহীন?
তাই কি এগিয়ে আসে না অস্ত্র বা রসদ বা চিকিৎসক !
সে খুঁজে চলেছে একটা বন্দুক , নাই বা থাকল তাতে কার্তুজ , বেয়নেট দিয়েই ধ্বংস করতে পারবে শত্রু শিবির কিন্তু পারিপার্শ্বিকতা তাকে হতোদ্যম করে দেয় ।
তার লড়াকু মানসিকতার কানে কানে কে যেন ফিসফিস করে বলে ওঠে – ‘ রিট্রিট ‘ ‘রিট্রিট ‘।
যুদ্ধের প্রথম দিকে সেনাছাউনিতে ঈথার তরঙ্গে ভেসে আসত কত উৎসাহের গান আর বিজয়ী হবার আগাম শুভেচ্ছা ।
আর আজ , সেই ঈথার তরঙ্গ নীরব ,
যেন হরপ্পার কোন এক নিদর্শন ।
তীব্র ক্ষোভে তার এখন ইচ্ছে করে পৃথিবীর বুক থেকে সমাজ শব্দটা টান মেরে ফেলে দিতে, পারে না ।
স্বার্থসিদ্ধির যুগে তা যে দখল করে রেখেছে বিপুল জনগণ তাদের স্বার্থ মেটানোর জন্য।
হতাশ হয় সৈনিক ।
তার ভাবনাতে আসে দুটো পথ –
হয় রিট্রিট অথবা স্বেচ্ছামৃত্যু ,
লড়াইয়ের স্বপ্ন এখন ক্ষীণ হতে হতে অস্ত যাচ্ছে জীবন দিগন্তে ।
সৈনিক দুচোখ ভরে দেখছে সেই দৃশ্য,
কতজন এই দৃশ্য দেখতে পায় ?
সৈনিক কৃতজ্ঞতা জানায় জীবন দেবতাকে ।