ভয়
বড়ো রাস্তা ছাড়িয়ে গলিটায় ঢোকার মুখেই ঝপ করে আলোটা নিভে গেল। লোডশেডিং! এই হয়েছে এক জ্বালা। কেউ কিছু প্রতিবাদ ও করে না! বলিহারি যাই মানুষদের! লোডশেডিং এর জন্য মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। শীতের সময়টা অতটা কষ্ট হয় না ঠিকই কিন্তু এই যে রাস্তা হাঁটতে হাঁটতে অন্ধকার নেমে এল! তাছাড়া ছাত্র ছাত্রী দের পড়াশোনার বিঘ্ন কিছু কম হয় না কি! এই যে শীতকালের সন্ধ্যায় মুখ আঁধার হয়েছে কী হয়নি , সব ঘরের ভেতর সেঁধিয়ে গেল। তা সেওতো এই লোডশেডিং এর জন্যই। ফাঁকা রাস্তায় মাঝে মাঝে দু একটা সাইকেল,সাইকেল রিক্সা কিংবা বাইক ছুটে ছুটে যাচ্ছে ।
অন্যদিন দাদা আড্ডা সেরে মোড়ের মাথায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে থাকে। টিউশন সেরে রেখা ফেরে দাদার সাথে। দাদা বাইরে গেছে। পরপর দুটো টিউশন পড়ে আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। একাই ফিরছে আজ।গা ছমছমে ভাব একটা! হঠাৎ করে মনে হয় কেউ যেন পিছু নিয়েছে। ভয় ভয় করতে থাকে, তবুও ভয় পেলে চলবে না। কিজানি মনের ভুলও হতে পারে! তার ধারণা ঠিক কি না নিশ্চিত হবার জন্য হাঁটার গতি কমিয়ে দেয়, পিছনের জনও শ্লথ হয়ে পড়েছে বুঝতে পেরে রেখা দ্রুত পায়ে চলতে শুরু করে। পিছনের জনও যে গতি বাড়িয়ে দিয়েছে বোঝে। কেউ যে তার পিছু নিয়েছে সে ব্যাপারে রেখা নিশ্চিত হয়।ভেতরে ভেতরে ভয় পেলেও সাহস হারায় না। আর একটু এগোলেই পাড়ার কাছাকাছি এসে যাবে।
এমন সময় সামনে থেকে একটা বাইক আসতে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। দপ করে রাস্তায় বাতিগুলোও জ্বলে ওঠে হঠাৎ করেই। সাহসে ভর করে ঝট করে আচমকা ঘুরে দাঁড়ায় রেখা। দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে..
হা হা হা হা সে কী হাসি!’কেমন,ভয় দেখালাম বলতো!’
ছোট ভাই, দাদা না থাকায় ও ই রেখাকে নিতে এসেছে আজ। সত্যি যা ভয় পাইয়ে দিয়েছিল!
রেখাবলল-‘ ওহ, যা ভয় পাইয়ে দিয়েছিলি!চল আজ,বাড়ী গিয়ে তোকে মজা দেখাচ্ছি!’
দুজনে হাসতে হাসতে হাঁটতে থাকে বাড়ীর দিকে।