মাগো,
অচল মৌন হিমাদ্রি সম
বধির পাষাণী দেবী হয়ে
আর কতদিন নীরব রবে তুমি !
ফুরিয়েছে তব পূজা উপাচার –
রিক্ত , নিঃস্ব আজ বক্ষ বসুন্ধরার ।
নৈরাশ্যের বিষবাষ্পে ছেয়ে গেছে ভুবন-
হুংকারিছে সদা সর্বগ্রাসী সাইক্লোন !
সর্বহারার ভয়াল আকুতি সব কিছুতেই –
প্রাণের স্পন্দন কোথাও নেই- আর নেই ।
কী দিয়ে তুষিব তোমায় আজ,
মাগো, নেই তো সেই কাপালিকের যুগ !
নৃশংস হত্যায় তোমায় তুষিতে-
নেই তো আর কেহ রক্তাহুতি দিতে ।
পুরনো সে যুগ নেই ,
যুগের হয়ে গেছে বিরাট বিবর্তন ,-
নব কাপালিকে ভরে গেছে এ ভুবন !
চোখ ঝলসানো নকল পোশাক পরা
ভিন্ন নামে – ভিন্ন সাজে রয়েছে তারা ।
কবলিত সন্তান তব আজ
নব কাপালিকের লোলুপ রুদ্র রোষে-
অহরহ তব সন্তানের রক্ত তারা চোষে ।
মাগো, তিল তিল দিয়ে রক্তাহুতি –
সৃজিল যারা সভ্যতার এ তিলোত্তমা মূরতি
রক্ত পিপাসু কাপালিক দিল যাদের আঘাত-
তুমিও কি চাহ পেতে তাদের রক্তের আস্বাদ?
সন্তান কাঁদছে ,-
আজো নীরব কেন তবে মাগো ?
দানব- দলনি রূপ নিয়ে তুমি
রক্ষিবে না এ ভুবন খানি ?
যুগের সাথে তব শক্তি কি গেল মোছে –
তব শক্তি কি হলো নিঃশেষ রকেটের গতির কাছে ?