প্রাপ্তি
ঠাম্মি না ফেরার দেশে চলে গেছে আজ দুমাস হয়ে গেল । ভীষণ ফাঁকা লাগছে।আমার জীবন , আমার ঠাম্মির শিক্ষা কে ঘিরেই গড়ে ঊঠেছে। ওনা র মতো মুক্তমনা , আধুনিকমনস্ক ,শিক্ষিত মানুষ আমি খুব কম দেখেছি।আমার সব শিক্ষার হাতেখড়ি ওনা র কাছে.–তা সেলাই হোক বা রান্না , পড়া শোনা হোক বা প্রকৃতি প্রেম ,। মানুষ এর মধ্যে য়ে ভগবান আছে,মানব সেবাই যে মাধব সেবা-..তা ঠাম্মির কাছেইশেখা। গাছপালা ভালোবাসা, প্রকৃতিতে একাত্ম হয়ে যাওয়ার শিক্ষাও ওনারই।
আমি ও দাদাভাই দেশের বাড়ি তে গেছি॥ বাড়ি তে ঠাম্মি নেই..এটা ভাবতেই পারছি না ।
দাদা ভাই ও আমি ওনা র ঘরটা গোছাচ্ছি॥ বড় সেগুন কাঠের সিন্দুক—..আমার সব কৌতূহলের উৎস!আজ দু ভাই বোনে তা খুলছি।
সুন্দর ভাবে গোছানো বাসন পত্র, রঘুবীরের গহনা ও পোশাক,জমির দলিল,আর নিচে লাল শালুর মোড়কে একটা বড়ো পোঁটলা!কি আছে ওতে? দাদাভাই কে বললাম ওটা নামাতে। ওপরের শালুর মোড়ক খুললাম—ভাঁজকরা একটা হাতে তৈরী গালিচা!!!চটের ওপর পাড়ে র সুতো দিয়ে বোনা এক রঙীন কাব্য.. ঠাম্মির নাম ও সেলাই করা আছে ক্রশস্টীচ বা আসন ফোঁড়ে ….”স্বর্ণ নলিনী বসু”’…..আমার ঠাম্মি! ওর ভেতরে একটা ”হাতখাতা”…..॥আমি ”হাতখাতা” টা খুললাম……..
বেশ কিছু বিশেষ তারিখের রোজনামচা,তার মধ্যে আমার জন্ম তারিখ টাও আছে…….সেখানে জ্বল জ্বল করছে ঠাম্মির গোটা গোটা অক্ষরে লেখা…..”আমার স্বপ্ন…”কুমু ”॥”