প্রেম এসেছিল নীরবে
“না ম্যাম আপনি যাকে ভাবছেন আমি সে জন নই,আপনার কোথাও যেন ভুল হচ্ছে”!
ভুল!আমার?তা অবশ্য বটে -এই ম্যাসেজটা র মধ্যে কেমন যেন একটা আক্ষেপ ঝরে পড়লো মহিলার।কিছু শব্দ এমনই গভীর হয় বেশ বোঝে সূতনু। তখনো উনি লিখে চলেছেন,” কেন এভাবে এড়িয়ে যাচ্ছ তনু,আমি কি করলাম যে ব্লক করে অন্য ফেসবুক একাউন্ট খুললে”!
পরশু সূতনু ভোটের ডিউটি যাবে।কথা প্রসঙ্গে বলতেই উনি মানে ত্রিপুরার বাসিন্দা রমা রায় কি কি প্রয়োজনীয় জিনিস নিতে হবে লিস্ট পাঠিয়েছেন।এমন ভাবে কেউ কোনোদিন যত্ন নেয় নি সূতনুর।কোথাও যেন একটা চাপা কষ্ট মহিলার।তার কোনো এক অত্যন্ত ভরসার বন্ধু হঠাৎ উধাও যার নাম আবার আশ্চর্যজনকভাবে একই ” সূতনু ব্যানার্জি”।
ইতিমধ্যে সূতনু তার পরিবারের ছবি দিয়েছে,সে যে আলাদা ব্যক্তি,থাকে দুর্গাপুরে এটা বলেও রমা রায়ের সন্দেহ দুর হয় নি।
“না তুমি আমার তনু,আমি জানি ,আমায় লুকাচ্ছ! হয়তো বুঝেছেন কিছুটা উনি,স্বাভাবিক আচরণ আবার মুহূর্তেই নানা পাগলামি।বলেছেন তিনি ভীষন অসুস্থ ছিলেন,নার্ভের যন্ত্রণায় একেবারেই পঙ্গু।এমন এক সময় তার বন্ধুটির ফেসবুকে আগমন ।ভীষন দায়িত্ববান পুরুষটি যত্ন ভালোবাসায় একটু একটু করে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়ে সুস্থ করে তুলছিলেন।কি যে হলো বহুমাস একদম চুপ।ফেসবুক প্রোফাইল টাও নিস্তব্ধ,এক্টিভ নয়!মহিলার আক্ষেপ কেন যে আর আসে না!!!
শুনে করুণা হলেও বেশ রাগ হয়েছে সূতনুর।বুঝিয়েছে ম্যাম এরা আসলে ভালো নয়,প্রেমের অভিনয় করে ফেসবুকে ভাব জমায়,আসলে মহিলাদের ইমোশন নিয়ে খেলে। তৎক্ষণাৎ উত্তর মিলেছে ,”না তার তনু ধোঁকা দিতে পারে না”।ইতিমধ্যে এই দুজনের পরিচয় গভীর হয়েছে,প্রায়ই দুজনে ফোন করে।নিখাদ বন্ধু রূপে দুজন গল্প করে,রমা দেবী এটাই বলেন ভগবান একজন কে সরিয়ে নিলেও একই নামের আর এক জনকে পাঠিয়েছেন।
সেদিন হঠাৎ খুশি খুশি এসএমএস রমার। “সূতনু জানো আমার তনু ফিরেছে।ওর বিরাট অসুখ,বাইপাস সার্জারি তাই ডাক্তার মোবাইল নিতে বারণ করেছে” । আনন্দের মধ্যেও সূতনু আক্ষেপে বলেছে,”তবে তো আমার যাবার সময় হলো গো রমা”!
“ইস্ এমন বলে না গো,তোমরা দুজনেই আমার সেরার সেরা বন্ধু,কথা দাও তুমিও কোনোদিন হারিয়ে যাবে না,” বলে কেঁদে ফেলেছে ভালো মনের রমা।”কথা দিলাম হারিয়ে যাবো না,সূতনুর চোখেও দুফোঁটা জল অজান্তে!