ওই যে দূরে না ফুরনো নীল আকাশ বুক চিতিয়ে আছে
নীহারিকার ফুলদানি সাজিয়ে দু হাত বাড়িয়ে
ওই আকাশ আমাদের বন্ধু ভেবেছিল, ভালোবেসেছিল,
প্রবল দাবদাহে ক্লান্ত শরীরে বৃষ্টির মলম লাগিয়ে
দিনের বেলায় নীল রঙের আল্পনায় নিজেকে সাজিয়ে
সে বারবার বলছিল ‘বন্ধু তুমি ভালো থেকো, আনন্দে থেকো।
আমরা শানিত বক্ষভেদী বাণ দিয়ে রক্তাক্ত করেছি তাকে,
তীব্র নগরায়নের উদ্ধত লোভে নিংড়ে নিয়েছি তাকে,
তাও সে বৃষ্টি ঝরায়, অভিমানী হয়ে মুখ ফিরিয়ে নেয় না।
ওই যে বাতাস নিঃস্বার্থ ভালোবাসার স্নিগ্ধ আবেশে মাতিয়ে রাখে
যার সান্নিধ্যে ভোর সুমধুর, সকাল মোহময়,সন্ধ্যে উত্তাল
যে তপ্ত দুপুরে হাজির হয় তার ভালোবাসার পরশ নিয়ে,
সেও আমাদের বন্ধু ভেবেছিল, ভালোবেসেছিল
সে উচ্চস্বরে বলেছিল ‘বন্ধু আমার স্নিগ্ধতায় শ্বাস নিও’
আমরা রক্তফেনা মাখা আবছা নয়ন শুধুই রাঙিয়েছি।
কালিয়ানাগের মুখনিঃসৃত বিষে নষ্ট হয়েছে তার ভারসাম্য,
ব্যক্তিত্বহারা দানবতন্ত্রে বিশ্বাস করেছি লোভীর মতো
তবুও সে স্নিগ্ধ শোভন ভালোবাসায় ভরিয়ে দেয়।
হিমালয়ের বুক চিরে তীব্র গতিতে নেমে আসে মিঠা জল
কিংবা পৃথিবীর সিংহভাগ অধিকার করে থাকা নোনাজল
পরম স্নেহে যুগযুগান্তর ধ’রে আমাদের বন্ধু ভেবেছিল
কল কল শব্দের মূর্ছনায় বলেছিল,’আমার মধ্যে অবগাহন কোরো’।
আমরা ছলনাময়ীর মতো তার অণু পরমাণু’তে বিষ মেশাচ্ছি,
এখন জলরূপী কবুতরের ডানার পালকে পালকে আগুন
দ্রুত নগরায়নের প্রকটতায় জ্বলে পুড়ে উধাও হওয়ার উপক্রম।
অতি ভদ্রতায় নিজের আকার,বর্ণ কিছুই নির্দিষ্ট করেনি জল
এখনও ভালোবেসে আপন করে নিয়েছে আমাদের।
আগুনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আগুন’কেই দোষী সাজাচ্ছি
বন্ধুত্বের মর্যাদা রক্ষায় ব্যর্থ হয়ে বটগাছের ছায়া খুঁজছি,
হাত পুড়েছে,মুখ পুড়েছে এখন শরীর পোড়ার অপেক্ষায়।
আকাশ, বাতাস,জল রূঢ় অঙ্গীকারে ভালোবেসে চলেছে,
আজন্মলালিত চতুষ্কোণ বন্ধুত্বের মর্যাদা রক্ষায় এখনো সচেষ্ট তারা।