রেলগাড়ির কামড়ায় দেখেছিলাম ওদের
বয়স পঁচিশ ছাব্বিশ কিম্বা তিরিশ হতে পারে।
মাঝে মাঝে ফোনে কথা বলতে বলতে—
চোখ মুছছিল অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে।
বহুদূরে চলেছে শ্রমিকের কাজ করতে !
কেরালা , কেরালায় ওরা শ্রম বিক্রি করে।
ঘরে রয়েছে মা বাবা স্ত্রী আর ছোট্ট সন্তান।
ছ্’মাস বাড়িতে থেকে মায়াটা বড্ড বেড়ে গেছে;
কিছুতেই প্রিয়জনকে ছেড়ে যেতে মন চায়না।
তবু যে যেতেই হবে,ঘরে অসুস্থ বাবা,
মায়ের বয়স হয়েছে,সন্তানকে বড় করে
তুলতে হবে,স্ত্রীর ইচ্ছে ছেলে,
বড় হয়ে বড় চাকরি করবে।
অভাবের সংসারে সাধ আছে,সাধ্য নেই!
মানুষ কত আশায় বাঁচে ,স্বপ্ন বোনে–
সন্তান হয়ে বৃদ্ধ মাবাবার প্রতি দায়িত্ব,
স্বামী হয়ে স্ত্রীর প্রতি ,আর পিতা হিসেবে
কতশত দায়িত্ব কর্তব্য একজন পুরুষের!
অথচ হারভাঙা পরিশ্রম করতে করতে–
ওরা নিজের জীবনের স্বপ্নগুলো বেঁচে দেয়।
ওরা ভুলে যেতে বাধ্য হয়,ওরাও মানুষ,
ওদের ও বুকের ভেতরে একটা হৃদয় আছে।
ওরা সেই ছোট বয়সে স্কুল ছেড়েছে,
সেই কোন্ কাল থেকে মালিকের
হুকুম তামিল করে চলছে তো চলছেই!
ওরা কাজ করে পথে প্রান্তরে—
তবু ঘরে ফিরতে চায়, ঘরের স্নিগ্ধ
শান্তির ছোঁয়ায় ওরা নিজেকে ফিরে
পেতে চায়। ওরা ভাবতে চায় ওরাও মানুষ!