ফাঁকিবাজ
চৌধুরী বাড়ির কাজের লোক সুমনা। বহুদিন ধরে ওই বাড়িতে কাজ করে ওর সংসারটা চালায়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাজ, সকালে চলে আসে দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে কাজের শেষে স্নান করে তারপর বাড়ি যায়। ওর ছেলে মেয়েরা বড় হয়ে গেছে। ছেলে কোন এক কারখানায় কাজ করে। মেয়ে এখন একাদশ শ্রেণীতে পড়ে। সুমনার বর ভ্যান চালায়। অনেকদিন ধরে সুমনা কাজে আসছে না। প্রতিবেশী হওয়ায় আমি চৌধুরী গিন্নিকে দেখতে পাই। বেচারী খুব কষ্ট পাচ্ছেন। একেই ভারী চেহারার মানুষ, তাতে ব্যবসাদার বাড়ি। প্রচুর কাজ থাকে। সুমনাকে মাঝেমধ্যে চৌধুরী গিন্নী বেশি পয়সা দেয়। ঝাড় মোছ করা, একটু বেশি কাচা। সুমনার খবর নিয়েছে চৌধুরী গিন্নী, ওদের বাড়ির পাশে আরেকজন এদিকে কাজ করে। সে বলল খুব অসুস্থ। তাই সুমনা আসতে পারছেনা। চৌধুরী গিন্নী র দয়ার শরীর। আজ রিক্সা বলে রেখেছেন। সুমনার জন্য কিছু দুধ ফল কিনেছেন। গরীব মানুষ_হয়তো মেয়েটা না খেয়ে পড়ে আছে। দরকার পড়লে আজকে সঙ্গে নিয়ে ডাক্তারও দেখিয়ে আনবে। রিক্সার ছেলেটি, ওর নাম পল্টু। সময়মতো এসে হর্ন দিচ্ছে। চৌধুরী গিন্নি একা যাবেন না। আমাকেও সঙ্গে নিলেন। দুজনে মিলে ওদের বস্তিতে পৌছালাম। ঘিঞ্জি ঘর, পল্টুকে দুরে দাঁড় করিয়ে গলি ধরে ওদের ঘরে , গিয়ে তো আমরা অবাক হয়ে গেলাম। সুমনা লাল লিপস্টিক পরে সেজেগুজে বসে আছে। আমাদের দেখে চমকে উঠেছে। বৌদি তোমরা? হ্যাঁ তোমার খুব অসুখ শুনে দেখতে এলাম। হ্যাগো বৌদি কাল অবধি উঠতে পারিনি। আজ একটু ভালো । তাই উঠে বসেছি। পাশের বাড়ির নাতনিটা এমন ভাবে আমারে সাজিয়ে দিয়ে গেল। বসো বসো বৌদি। কালকেই আমি কাজে যেতাম। জানিতো তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে। রাগ কোরোনা বৌদি। প্রথমে চৌধুরী গিন্নি খুব রেগে গেলেও আসতেছে ঠান্ডা হলেন। ওকে শুধু বললেন সুমনা তোমার ফাঁকিবাজি আমি ধরে ফেলেছি। যাইহোক কাল থেকে কাজে যেও।