থাপ্পর
আর বেশী দিন বাকী নেই পূজার। হরনাথ বাবু পূজার বাজার সেরে বাড়ি ফিরলেন। সঙ্গে তার মেয়ে অনামিকা ছিল। উবে-ট্যাক্সী গাড়ি থেকে জামা কাপড়ের প্যাকেট, জুতোর বাক্স ঠিক মতোন নামল কিনা তার তদারকিতে ছিল অনামিকা। কেনা কাটার সমস্ত জিনিষ নামিয়ে এনে খাটের উপর রাখা হলো। সব প্যাকেট খুলে ফর্দ ধরে জিনিষ মিলিয়ে নিতে লাগল অনামিকা। সে একটা প্যাকেট খুলে বলল, বাবা তুমি ক’টা গেঞ্জী কিনেছো?
– কেন, দু’টো। দু’টোরই তো দাম নিলো কেন কম দিয়েছে নাকি, শালারা যা চোর।
-কম দেয়নি বাবা, বেশী দিয়েছে একটা।
– মানে?
– তিনটে দিয়েছে,ভুল করে।
-বেশ ঠিক আছে। হরনাথ বাবু পরিতৃপ্তির হাসি হাসলেন। বললেন, নে নে সব মিলিয়ে নে ভাল করে। লিষ্ট ধরে মেলাতে মেলাতে, একটু পরে অনামিকা বলল, বাবা মায়ের শাড়িটা তো পাচ্ছি না।
– সে কি রে? কোথায় ফেললাম আবার? সব নিয়ে তো ওই গেঞ্জীর দোকানটাই ঢুকে ছিলাম, শেষটায়। বোধহয় ওখানেই ফেলে রেখে এসেছি। সেখানে পড়ে থাকলে কি আর ফেরৎ দেবে? যা চোর সব। রাতে ভাল ঘুম হলো না তার।পরের দিন সকালেই হরনাথ বাবু ছুটলেন গেঞ্জীর দোকানে। দোকান খোলা দেখে মনে মনে খুশি হলেন। দোকানে ঢুকে দোকানদারকে বললেন, দাদা কাল কি এখানে একটা শাড়ির প্যাকেট ফেলে রেখে গেছি?
– হ্যাঁ দু’টো প্যাকেট পড়ে আছে,দেখুন কোনটা আপনার?
– এই তো এই’টা।বাঁচালেন ভাই,কত টাকা দামের জিনিষ।
– দেখুন না কাল তাড়াতাড়িতে আমাদেরও দু’একটা জিনিষ চলে গেছে, সামান্য গেঞ্জী রুমালের ব্যবসা, দু’একটা গেলেই ক্ষতি হয়ে যায়। অপরাধী সাব্যস্ত করে যেন কেউ হরনাথ বাবুর গালেই সজোড়ে এক থাপ্পড় কষালেন।