দায়িত্ব
মধ্যবিত্ত সংসার, খুব ভালো গৃহিণী নয় মেধা, রান্না করতে ভালোবাসে নতুন কিছু, কিন্তু একঘেঁয়ে রোজকার রান্নায় বিরক্ত লাগে, বাড়িতে বাচ্চার দেখাশোনার লোক অনেকটাই সামলে নেয় অবশ্য। সংসার, ছেলের পড়াশোনা নিজের নিয়মে চলতে থাকে। কখনো কখনো একা বসে আকাশ দেখতে ভালো লাগে, মনে পড়ে কিছু একান্ত নিজস্ব ভালো লাগার মুহূর্ত। সবুজ গাছ,ফুল পাখি তখন কেমন যেন বন্ধু হয়ে ওঠে।
স্বামীর আদর্শ বৌ না হলেও সুখে দুঃখে এগিয়ে চলে জীবন। কর্তা গিন্নীর মধ্যে ভালোবাসা থাকলেও পারষ্পরিক গল্প, সময় দেওয়ায় ধুলো জমেছে দিনে দিনে,সে ধুলো মুছে ফেলার তাগিদ ও যেন নেই কারোরই।
নেটে সপিং বা ফেসবুকে চোখ বোলানো তে অভ্যস্ত মেধার জীবন তবু কি যেন একটা ঘাটতি কুরে কুরে খায়।
সেদিন কিছু কেনাকাটা সেরে ফেরার পথে হঠাৎ দেখা নীতির সঙ্গে ওর ছোট বয়সের বন্ধু, মাঝে যোগাযোগ ছিল না। গড়ে ওঠে নতুন যোগাযোগ। নীতিকে মনের দুঃখ,বিষন্নতা খুলে বলে মেধা। নীতি বলে আমি একটা আশ্রমে তে বাচ্চাদের দেখাশোনা করি নিয়মিত, এখন আমার জীবনে ঐ বাচ্চাগুলো আনন্দে ভরিয়ে তুলেছে তুইও জয়েন করতে পারিস। বন্ধুর কথায় মেধা আলোর পথ খুঁজে পায়, জয়েন করে এবং চেষ্টা করে নিয়মিত যাতায়াত করবার। এজন্য শ্বশুর বাড়িতে বেশ কিছু কটুক্তি শুনতে হলেও সে অবিচল নিজ সিদ্ধান্তে।
কয়েকদিন বেশ ভালোই কাটছিল কিন্তু হঠাৎ ছেলের শরীরটা খারাপ হলে বরের ঝাঁঝালো মন্তব্য তাও নিজের ছেলে ফেলে পর নিয়ে সুখী হও। দুচোখ জলে ভরে ওঠে মেধার মনে মনে নিজেকে দোষী মনে হয় মেধার, তখনই ছেলে বলে ওঠে মা আমি চাই তুমি ন.জি.ও তে তাও মে যাইচ্ছে বলুক ভয় পেয়ো না আমি ভালো হয়ে যাব ঠিক।
এটা আমাদের সবার দায়িত্ব, আমি বড়ো হলে আমি ও নিজের দায়িত্ব পালন করবো। ছেলেকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মেধা, মনে মনে বলে ঈশ্বর শক্তি দিও এগিয়ে চলার।