এখানে কোথাও শরজর্জরিত দুলদুল নেই,
ফোরাতের কুলু কুলু ধ্বনি নেই, নেই কাশেমের
লাশ নিয়ে নতুন মেহেদি রাঙা হাতে মুখ ঢেকে
বিবি সখিনার বুকফাটা করুণ বিলাপ, তবু
রাজধানী শহরের অলি গলি, জীর্ণ বস্তি, প্রায়
সর্বত্র কেবলি, ধূ ধূ কারবালা। হাহাকার ওঠে
ঘরে ঘরে; চতুর্দিকে শূন্য কলস, বালতি, ঘড়া।
কারো কারো চোখে মরুভূমি, মরীচিকা, আর্ত তাঁবু,
ফোরাতের রক্তাপ্লুত তীর জেগে ওঠে আর
‘পানি দাও, পানি দাও’ আওয়াজে বাতাস ভারী হয়
প্রহরে প্রহরে। এই যাঞ্চা রবীন্দ্রনাথের বৌদ্ধ
ভিক্ষু আনন্দের ‘জল দাও’ নয়, বিপুল গোষ্ঠীর
আর্তনাদ জলসত্র লক্ষ ক’রে কোন্ চন্ডালিকা
ঘড়াভরা জল দেবে এনে শত শত পিপাসার্ত
মানুষের আঁজলায়? চৈত্রের দুপুরে যারা আজ
বিশুষ্ক, অপেক্ষমান, তারা কি করবে পান এই
নর্দমার কালো পানি পথচারী পশুদের মতো?
বস্তুত নগরবাসী কারবালা প্রান্তরে দাঁড়ানো!