আমার দরজা আমার জানালা তোমাকেই ভাবে
সারাদিনমান,
তোমার স্বপ্নে বিভোর আমার লেখার টেবিল।
কোনোদিন তুমি আসেনি এঘরে, দাঁড়াওনি হেসে
দরজার কাছে, র্যা ক থেকে তুলে নাওনি নতুন
কবিতার বই
কিংবা বসোনি কাঠের চেয়ারে, শরীর তোমার
দাওনি এলিয়ে এই শয্যায়। তোমাকেই ভাবে
আমার রুক্ষ জেগে-থাকা আর উচ্ছুংখল
রাত্রির ঘুম।
তোমাকেই ভাবে আমার উঠোন, সন্ধ্যালোকের
রক্তগোলাপ, রান্নাঘরের ফোকরে উষ্ণ
পায়রার বুক, শূন্য রেকাবি এবং আমার
কবিতার খাতা।
আমার আঙুল, আমার চোখের অভিজ্ঞ পাতা,
পাঁজরের হাড় প্রতি রোমকূপ তোমাকেই ভাবে।
কোনোদিন তুমি
আসোনি এখানে, বসোনি আমার পাশে কতকাল
তুমি আসো তবু মধ্যরাত্রি পেরুনো প্রহরে
চিত্রকল্পে,
হৃদয়ের কত অন্তরঙ্গ ধ্বনির মতন
শব্দমালায় স্বপ্নের মতো পংক্তিপুঞ্জে।
কে যেন সহসা বলে রাত্তিরে এভাই তুমি
এভাবেই থাকো-
নীরবতা ভালো, নীরবতা ভালো, নীরবতা ভালো।
কিন্তু তবুও পাথরের নিচে স্পন্দিত একা
টিকটিকিটার
মতো কিছু কথা সাবলীলভাবে জন্মাতে চায়।
সুনীল তোয়ালে ঢউয়ের মতন পড়ে আছে চুপ,
মুখস্থ করি তোমার মুখের রেখা কালো চুল,
যে-ফুল তোমার খুব ভালো লাগে, ভাবি তার কথা,
আমার ত্বকের
ভেতরে চকিতে কোমল পাপড়ি ঢুকে যেতে দেখি,
অন্ধকারকে আরো গাঢ় করে ক্ল্যারিওনেটের
খুব পুরু সুর-
জান্লায় হাত রাখে দেবদূত, ঢেকে ফেলে মুখ-
বস্তুত স্মৃতি এক ধরনের জীবন যাপন।