এসেছে সে বহুদূর থেক এই মাঠের কিনারে
গোধূলিতে, জামায় বিস্তর ধুলোবালি, রুক্ষ চুল, চোখ দুটো
জবা-লাল। জিরোবার ঠাঁই
পাবে কি এখন কিয়দ্দূরে? গাছতলা হাতছানি
দেয়, ক্লান্তি কুয়াশা ছড়ায়
শরীরে, মগজে; মাথা রেখে
শিমুল তলায় সে ঘুমায়, স্বপ্নে তার
আঁকাবাঁকা কালো রেখা, বেগুনি গোলক,
মত্ত ঘোড়া, শাদা-লাল, কাটা মুণ্ডু ভেসে ওঠে আর
কে এক রূপসী কাঁদে মৃতের নিঝুম মাহফিলে।
লোকটার ঘুমের ভেতর মনে হয়, যেন সে-ও
প্রাচীন কালের মৃত কেউ, যার কোনও স্মৃতি নেই,
আনন্দ, বেদনা-কিছু নেই; কেবল নিষ্পন্দ বসে-
থাকা আছে, আছে
মৃতের মিছিল দেখা। কতিপয় লোক,
নেকড়ের মতো মুখ ওদের, খুবলে নিচ্ছে দ্রুত
মেধাবী পুরুষ আর রূপবতী বিদুষীর মুখ। ‘বলোতো কেমন আছো?’
-চকিতে জিজ্ঞেস করে আস্তে হেঁটে চলে যান নিঃসঙ্গ ধীমান।
লোকটা স্বপ্নের অভ্র দু’হাতে ছড়িয়ে
ঘুমের ভেতর হাঁটে, হেঁটে যেতে থাকে পৃথিবীর
উল্টো পিঠে। অকস্মাৎ চোখে পড়ে তার
নিজের ফতুর মৃতদেহ পড়ে আছে বনপথে,
বোঝে না কেন যে বিরানায় ওর মৃতদেহ ঘিরে
ক’জন ধীমান বীণা বাজিয়ে বিলাপ করছেন অবিরল।