ছিলাম নিজেরই ঘরে নিরিবিলি, রাত আড়াইটা, অন্ধকার
ছিল না তেমন গাঢ়, বরং ফিকেই বলা চলে। অকস্মাৎ
চোখে পড়ে-চার দেয়ালের বুক ফুঁড়ে আটটি পুরোনো হাত
প্রায় পচে-যাওয়া, সবুজাভ,
বেরিয়ে এসেছে আর হাতগুলো কেমন বাচাল হয়ে ওঠে,
যদিও অবোধ্য সেই ভাষা। আমার ভয়ার্ত হওয়া
ছিল খুবই স্বাভাবিক, অথচ সহজে আমি তাদের নিকটে গিয়ে হই
প্রশ্নাকুল, জ্ঞানান্বেষী শিক্ষার্থীর মতো
জেনে নিতে চাই ওরা কারা, কেন আজ
গভীর নিশীথে একজন অতি সাধারণ লোকের নিবাসে
এরকম রহস্যজনক আবির্ভাব? সবুজাভ
গলিত আটটি হাত কলরব থামিয়ে আমার দিকে আসে
ওদের আঙুল থেকে নক্ষত্রের কণা,
চাঁদের রূপালি ধুলো ঝরে, পচা মাংস থেকে
কৃমির বদলে নানা সতেজ ফুলের জন্ম হয়। বলে ওরা,
এবার ওদের ভাষা বোঝা যায়, ‘আমরা তোমার
অলিখিত কবিতার পরিত্যক্ত কিছু পঙ্ক্তি, কবি,
অবহেলা আর উপেক্ষায় আজ আমাদের হয়েছে এ হাল।
কিসের ঝাঁকুনি যেন আমাকে জাগিয়ে দিয়ে যায়-
তবে কি চেয়ারে বসে ঘুমের গুহায়
কাটিয়েছি এলোমেলো কিছুক্ষণ? সমুখে লেখার
খাতাটা রয়েছে খোলা, শাদা পাতা কাটাকুটিময়।