ওগো মেঘলা দিন তোমার কি এক চাতুরিতে
আমার মনকে করো মেঘলা । কেন?কেন?
তোমার টগর,গন্ধরাজ,বেলফুল
আমার মনে এনে দেয় কবি প্রণামের নাচের সাজ।
শত শত করতালি মাতিয়ে দিতো আসর ।
নতমস্তক ভঙ্গি মম , অঞ্জলি সম কর।
হাতে,মাথে ফুলের গন্ধে ভরা মেঘলা দিন ,
নাচের তালে,ভাবের ঘোরে মেতে,রক্তের রিমঝিম ।
আমার শিশু বেলার ভয়ে চকিত মেঘলা দিন
বাবাকে কাছে না পাওয়া মেঘলা দিন ।
আমার ফুটন্ত কুঁড়ির শরম রাঙ্গা মেঘলা দিন
চার দেয়ালে ঘেরা, মায়ের শাসনের মেঘলা দিন ।
তুমি কেন করো আমার মনকে মেঘলা?
যখন থাকি বিজন ঘরে একলা ?
আমার কিশোরী বেলার ,,মন কেমন করা মেঘলা দিন
আমার প্রিয়র বিরহে কাতরতার মেঘলা দিন ।
ওগো পড়ন্ত বেলার নিরস মেঘলা দিন ,
তুমি কেন বাজাও দুঃখের বীণ ?
চড়িয়ে তোমার মেঘের দলের ভেলায়
দোলালে মোরে স্মৃতি চারণের খেলায়।
আমার বিস্মৃতির অতলে খুঁজে পাওয়া সেই দিন,
মায়ের বুকে মুখ লুকিয়ে ভয়ে ভরা সেই দিন ।
স্কুল জীবনের নাচে গানে হাতে পুজোর থালা
কবি গুরুর মাল্য দানে শুরু হতো পালা ।
স্কুলের মাঠের কৃষ্ণচূড়া হাওয়ায় দোল খাওয়া দিন,
তোমার তাড়নে মা হারা এক চড়ুই পাখির শেষ দিন।
কেন করো মোর স্মৃতি বাগিচায় জল সিঞ্চন।
কেন করো মোর সুখ দুঃখের অতীত কে জাগরণ?
তোমায় যে কি বলে সম্বোধন করি?
দুখের সায়রে ভাসিয়ে তুমি দুঃখ নিলে হরি ।
তুমি যে একাধারে দুঃখ নিবারণি,
দুঃখ সঞ্চারিনি,আবার সুখ জাগরণি ।
তোমার রূপের মনোহরণ জাদুকরী খেলাতে,
স্মৃতির অশ্রু ঝড়তে দেয়না আমার আঁখি পাতে ।
শুষ্ক শাখে সবজে-সাদা কদম্বেরই ডালেতে
শুকনো চর এ জল এনে দাও ঘর যে ভাসে বানেতে ।
নিথর আমি,শুধুই চেয়ে দুয়ারে বসে থাকা
কি যে ভাবি তা জানিনে-শুধু ই আঁকা বাঁকা ।
মন কাঁদে গো তোমায় জড়ানো শাখার পড়ে শাখা
কবে আবার রামধনু রঙ মেলবে যে তার পাখা।
মনের অতলে জ্বল্ জ্বল্ করা মনি
বছর পরে ফিরে এসো তোমার যে দিন গনি ।
ওগো কবি গুরু বরণ মালা নাওগো মম তুমি
তুমি বিনে কি মেঘলা হতো এতো গুনে গুনী?