Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » মনভাসির দেশ || Manisha Palmal

মনভাসির দেশ || Manisha Palmal

চলেছি সেই মনভাসির দেশে!কেলেঘাই পার হয়ে প্রান্তিক মেদিনীপুৃরের ওড়িশালাগোয়া গ্রামে জঙ্গলমহলে॥জঙ্গলের বুক চিরেএগিয়ে চলেছে পাকা সড়ক অজগরের মত! মাঝে মাঝে তা এয়োতির সিঁথির মত লাল॥দুপাশে অদ্ভুত বৈপরিত্য!ডানে মাঠভরা রবিখন্দের বাহার!মাঠ ফসলের পরাণকথা॥সুন্দরীমাঠ ফসলের সাজে সোহাগী॥বামপাশে রূপসীজঙ্গল!বনভূমি বড় অহংকারী॥রূপের গরবে তার আর পা পড়ে না মাটিতে॥বড় বড় মহীরূহ বনস্পতি!সাথে নাম না জানা লতায় শোভিত শাল মহুয়া পলাশের জঙ্গল॥
আলোকলতার সোনালী ঝালরে ঢাকা॥উগ্রগন্ধী বনজ কুসুমের সৌরভে মাতাল বাতাস॥পাখ পাখালির কলতানে সরগরম জঙ্গলভূমি॥কত রকমের পাখী,,,, দোয়েল,শ্যামা,কুবো,শালিখ,বুলবুল, হরিয়াল,,,, কি নেই?জঙ্গলের মাঝের জলাশয়ও নালায়,,,, পানকৌড়ি,জলপিপি,ডাহুক,বক,মাছরাঙার মজলিশ॥আর আছে মেটে খরগোশ,বনবেড়াল,খটাশ,শেয়াল॥এখন জঙ্গল সরগরম দলমার দামালদের জন্য॥বড় উৎপাত হাতির॥
আর ডান পাশে সোহাগীমাঠ ফসলের পরান কথা শোনায়॥দিগন্তবিস্তৃত সবুজের গালিচা॥মাঝে মাঝে সরষের হলুদ চোখ জুড়িয়ে দেয়॥সূর্যমুখীরসোনালী সোনা ছড়ায়॥মৌমাছি,প্রজাপতি ভ্রমরের গুনগুনানিতে মাঠ ভরে আছে প্রাণ চাঞ্চল্যে॥দুই সই গলাগলি॥আলাপ করে দুজনে,,,,,,,রূপসী জঙ্গলের বড় দেমাক!সে যে প্রাণদায়িনী॥ কতনা বনজসম্পদের মালিক সে!আর সোহাগী মাঠ ফসলের প্রাচুর্যে ডগোমগো॥রবিখন্দেরনানা ফসলেমাঠের গালিচা উথলে উঠছে॥এরপর কেলেঘাই নদী॥একপারে জঙ্গল অন্য পারে ফসলভরামাঠ॥নদী খরস্রোতা॥শীতে ধীরগতি,ক্ষীণ,বর্ষায় দুকুল প্লাবী॥কোপন স্বভাবা আদিবাসী কন্যারমত॥আপাতশান্ত,রাগলে চন্ডালিনী॥আলুলায়িতকেশা, রোষদৃষ্টিসম্পন্না, হড়পাবানে দুূ কূল ভাসিয়ে দেয়॥তারপর আবার শান্ত॥এই প্রকৃতির মিলন মেলার অংশ হতে ইচ্ছে করে॥
গ্রামে ঢুকতেই বিরাট বাঁধ ॥ পাড়ে শতাব্দী প্রাচীন শিব মন্দির॥আগে মাটির দেউল ছিল॥ এখন পাকা হয়েছে॥সামনে আটচালা ও শিতলা মন্দির মাটির॥বিরাট বিরাটঅশথ্থ গাছের ছায়ায় মন্দির তলা ঢাকা॥এখান কার গাজন খুব বিখ্যাত॥ষোল ভক্তার গাজন॥কাছিপোড়া, চরকিপাক, বাণফোড়া হয় এখানে॥
চড়ক সংক্রান্তিরআগের দিনএখানে কাছিপোড়া ও আগুনপাট হয়॥গাজন সন্ন্যাসী রা পা বেঁধে মাথা নিচু করে আগুনের ওপর ঝোলে! ঐ আগুনে ধূনার অঞ্জলি দেওয়া হয়॥একেই কাছিপোড়া বলে॥ আগুনপাট হলো কাঠকয়লার জ্বলন্ত আঙরার ওপর খালিপায়ে হেঁটে যাওয়া॥আগুনে হাঁটার আগে জলজ দামে পা ঘষে নেয় ভোক্তা॥একটুও ফোসকা পড়ে না পায়ে॥কি বিশ্বাস মানুষের॥কথিত আছে যে ভোক্তা নিরম্বু উপবাসের জন্যই নাকি এটা হয়॥ চড়ক সংক্রান্তির দিনঢাকের উদ্দাম বোলের সয়থে মানব মালার তান্ডবেবুক কেঁপে ওঠে॥নারকেলদড়ি দিয়ে বাহুর মাংসপেশী ফুঁড়ে মালা গাঁথা হয়॥দুহাতেই॥ ঢাকের তালে নেচে চলেছে মানব কুসুমরা॥রক্ত ঝরে পড়ছে বাহু বেয়ে॥ কোন ভ্রূক্ষেপ নেই॥কেউ জিভে লৌহশলাকা ফুঁড়েছে॥কেউ প্রায় 50ফুট উঁচু চড়ক গাছেবন বন করে ঘুরছে॥ দেখে শিহরিত হতে হয়॥কি বিচিত্র ধর্মবিশ্বাস॥পরের দিন এই সব সন্ন্যাসী রা পান্তাভাত,কলমীশাকও মৌরলামাছ খেয়ে আবার গৃহী হয়ে যান॥এক মাসের সন্ন্যাস ব্রত শেষ হয়॥সময়ের সাযথে সাথে এই মেলা পবিত্রতা হারাচ্ছে॥আধুনিকতার কৃত্রিমতায়আবিল হচ্ছে॥ এখনও আমি চোখ বন্ধ করলে ঐ দৃশ্য দেখতেপাই॥শিহরিত হই মনে মনে॥

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *