Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রাসলীলা || Manisha Palmal

রাসলীলা || Manisha Palmal

রাসলীলা

রাসলীলা শব্দটি এসেছে সংস্কৃত” রস “থেকে! রস অর্থ আনন্দ ,অনুভূতি, দিব্য প্রেম। আরে লীলা অর্থাৎ দৈবিক কাজ। এখানে কাজ অর্থে এক বিশেষ প্রকার নৃত্যের কথা বলা হয়েছে। শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমতি রাধারানী ও গোপী বৃন্দ সহ যে বিশেষ নৃত্য করেছিলেন যা সম্পূর্ণ সাত্ত্বিক অনুভূতি ভালোবাসা ও আনন্দময় ছিল। তাই রাস হল এক বিশেষ দৈবিক নৃত্য।
পদ্মপুরাণে শারদ রাস ও বাসন্তী রাসের উল্লেখ পাওয়া যায়। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে বাসন্তী রাস এবং শ্রীমৎ ভাগবত ওবিষ্ণুপুরাণে শুধুমাত্র শারদ রাসের বর্ণনা আছে। হরিবংশ ও ভাসের বাল চরিতে উল্লেখ আছে যে কৃষ্ণ গোপিনীদের সাথে হল্লীশ নৃত্য করেছিলেন।হল্লীশ নৃত্য যদি তাল যুক্ত ও বিবিধ গতি ভেদে বৈচিত্র্যপূর্ণ হয় তবে তাকে রাস নামে অভিহিত করা হয়।
শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং বিষ্ণু অবতার ও শ্রীমতি রাধা তার পরাশক্তি। কথিত যে ত্রেতাযুগে সেইসব মুনিঋষি যারা অনেক সাধনা করেও শ্রীরামের দর্শন পাননি তাদের মনের আফসোস ছিল। দ্বাপরে তারাই গোপী রূপে আবির্ভূত হয়ে তাদের স্বপ্ন পূরণ করেন। ভগবান যখন পৃথিবীতে লীলা করেন তখন তাঁর লীলার সঙ্গীদের দৈবিক শক্তি দ্বারা সৃষ্টি করেন ও লীলা শেষে তাঁরা সবাই পৃথিবী ত্যাগ করেন।
শারদ পূর্ণিমা তিথিতে শ্রীধাম বৃন্দাবনে এই লীলা সম্পন্ন হয়। গোপীরা কৃষ্ণের বাঁশি শুনে যমুনাতীরে কদম গাছের তলায় শ্রীকৃষ্ণও শ্রীমতি রাধা কে ঘিরে বৃত্তাকার এ নাচ করতে থাকেন। গোপীদের তিনি কথা দিয়েছিলেন তাই মায়া বলে প্রত্যেক গোপীর সাথে একই সময় নৃত্য করতে লাগলেন।
রাসলীলা তিন যোগ এর সমন্বয়ে গঠিত– জ্ঞানযোগ কর্মযোগ ও ভক্তিযোগ
গোপী গনের সঙ্গীত যাতে পরমাত্মা চরণে নিজেকে বিলীন করার ইচ্ছা তা হল জ্ঞানযোগ এর প্রতীক।
শ্রীকৃষ্ণের বাঁশির সুর ও তার সাথে নিজেদের সংগীতের তাল মিলিয়ে গোপীরা যে নৃত্য মুদ্রা তৈরি করেছেন তা হলো কর্মযোগ।
আর এই সঙ্গীত নৃত্য সুর সবকিছুর সমন্বয়ে পরমাত্মাতে লীন হওয়ার যে ভাবে র আবেশ তা হল ভক্তিযোগ।
রাসলীলার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য এইযে—
গোপীদের চক্রাকারে নাচ হলো মায়াবদ্ধ জীবের “জন্ম মৃত্যু” চক্র! প্রত্যেক গোপী র সাথে শ্রীকৃষ্ণের উপস্থিতি অর্থাৎ তিনি অন্তর্যামী সকল জীবের মাঝে তিনি( পরমাত্মা) আত্মা রূপে বিদ্যমান।
এ জগতে সব আত্মা প্রকৃতির অংশ তাই রাসলীলা তে সব গোপী উপস্থিত ছিলেন ।
চক্রের মাঝে ছিলেন পরম পুরুষ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও তার পরাশক্তি শ্রীমতি রাধারানী। পুরুষ ও প্রকৃতির অপূর্ব মেলবন্ধন।
রাস নৃত্যের অর্থ আমাদের জীবন মৃত্যুর মাঝে আমরা বারবার একই চক্রে আবর্তিত হই। মায়া মোহ সহ ষডরিপু আমাদের এই একই বৃত্তে আটকে রাখে কিন্তু আমাদের সবার আসল গন্তব্য হল বৃত্তের কেন্দ্রে পৌঁছানো অর্থাৎ পরমাত্মায় বিলীন, হওয়া, জীবাত্মার পরম গন্তব্য তাই!
মায়া ও ষডরিপুর জাল ছিঁড়ে আমাদের জ্ঞান কর্ম ও ভক্তির সমন্বয়ে নিজেদের আত্মার থেকে মায়ার পর্দাকে সরিয়ে নিতে হবে— এই পর্দা না সরলে আমরা পরম আত্মার স্বরূপ বুঝতে পারব না।
তথ্যসূত্র -শ্রীমদ্ভাগবতম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *