কাঁঠাল গাছের নীচে কুয়োতলা,
আমাদের দিদিমা শীতের কুয়াশা মাখা সকালে
ছাই দিয়ে বাসন মাজতেন , পাশেই আমলকি গাছ
শীতের দানা বাঁধত আমলকির পাতায় পাতায়,
শিশির ঝ’রে পড়ত ঘাসে ঘাসে ।
নাম না জানা দুয়েকটা পাখি উড়ে এসে বসত
আমলকির শাখায়,সোনাঝরা রোদ হাসত আকাশে
দিদিমা বিধবা হয়েছিলেন মা’র বয়স যখন আড়াই মাস।
এক থান সাদা কাপড় আর দু’মুঠো অন্ন
এই প্রত্যাশাতে মানুষ এতকাল এভাবে বাঁচতে পারে
বিশ্বাস করা কঠিন,অপ্রাপ্তির চরম স্পর্শেও নির্বিকার,
অসীম যত্নের ছোঁয়ায় আমাদের বেড়ে ওঠা
বেড়ে ওঠা হৃদয় নিঙড়ানো ভালবাসায়।
একাত্তরের ‘রায়ট’ এর সময় গুলির আওয়াজে
কাঁঠাল গাছের নীচে যখন বাসন ঝনঝন শব্দে
বেজে ওঠে, তখন সবাইকে দূরে সরিয়ে
পাহারায় আগলে রেখেছেন ঘর দোর।
জীবন যেখানে নির্বিকার, মৃত্যু যেখানে অর্থহীন
একাকিত্বের গভীরে হারিয়ে গিয়েও স্বর্ণলতারা
নিশ্চুপে শতাব্দী ব্যাপী এভাবেই বুঝি বেঁচে থাকে!