অবাস্তব কল্পনা
ছুইটবেল্লায় মুনিয়া বইলতক ও মাই মু কব্বে বড়্ড়ো হব্বক।
তুর মুত শাড়্যি পইরবক,এত্ত বইড়ো
বেইনী হব্বেক।
গাইমছা দিইয়ে শাড়্যি পরতক।
তাইরপর তের বছ্ছরে বিইয়া হয়্যে গেল্লক।
পড়্যাশুন্যা কুথ্থায় চল্যে গেল্লক।শ্বশ্শর ঘইরে শুধ্ধু কাইজ কইরতে হয়।
সুব্বার সেব্যা কইরতে কইরতে এক বাইচ্চার মা।
মুনিয়া বল্যে কেন্য যে মার মুতন বড়্য হত্তে চাইতাম।
ছোট্ট ছিললাম ভাল্য ছিল্যক।
মুনিয়ার বর কোলকাত্যায় ফাইক্টরীতে চাইকরি করতক। পুরুলিয়ার জম্যি বেচেক ফ্ল্যাট কিনছেক।মুনিয়া কোলকাত্যায় এস্সে ছেল্যাকে স্কুইলে ভইরতি কইরছেক।
সুব্বাই ছেল্যার কথ্থা শুন্যেক হাইসতক।তাইরপর ও কোলকাতার ভাষা শিখে যায়।মা কে ও আস্তে আস্তে শেখাতে শুরু করে।
মুনিয়ার ছেলে স্কুলে ফাস্ট
হয়। মুনিয়া ও ভালো পড়াশোনা তো ছিল। কিন্তু বাড়্যির মা দের দেখ্খে বড়্যো হত্যে চাইতক। মুনিয়া বরকে বলে মুকে স্কুলটোতে পড়াইবেক।
বর বল্যেক হবেক লাই মুনিয়া। মুনিয়া ছেল্যাকে মানুষ করো।
মুনিয়া কোলকাতা তে এসে আচার আচরন,কথা সব পরিবর্তন।ছেলে নাইনে ওঠলে ও ছেলের কাছে লেখাপড়া শুরু করে । মুনিয়া মাধ্যমিক দেয় প্রাইভেটে।মা ও ছেলে দুর্ধর্ষ ফল করে।ছেলের পড়াশোনা তে অনেক খরচ ,তাই মুনিয়া আর পড়ে না।। শাড়ি ছেড়ে শালোয়ার পরে।বর মুনিয়ার সব স্বপ্ন পূরণ করার চেষ্টা করে। মুনিয়ার ছেলে গ্রাজুয়েট হতে না হতেই ব্যাঙ্কে ক্লার্কের চাকরি পেয়ে গেছে।এবার মুনিয়া বরকে বলে আমাকে একাদশ ক্লাসে ভর্তি করাবে!বর বলে লোকে হাসবে। তুমি ছোট বাচ্চাদের সাথে পড়বে!
মুনিয়া মন খারাপ খুব। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে বরকে ধাক্কা দিয়ে বলে যদি বয়স শুরু করে কমতে ,তাহলে স্কুলে ভর্তি করাবে।
স্বপ্নে মনে পড়ে ইচ্ছেপূরণ গল্পটি। বাবা ছোট হয়ে স্কুলে যাচ্ছিল আর ছেলে বাবা হয়েছিল।
বর বলতে থাকে মনের বয়স ঠিক থাকলে হবে।যদি বয়স শুরু করে কমতে কিন্তু হাঁটু, কবজি বয়স তো দিন দিন বাড়বে।সময় সব কিছু সামনে এগিয়ে নিয়ে চলে।স্বপ্ন মনের গহীনে থাকে।
এরপর
মুনিয়া মানভূম ভাষায় নিজের আত্মকাহিনী লেখা শুরু করে।
মাঝে মাঝে একা একা আপনমনে কবিতা বলে
ডাইকছেঁ যে শালবনী
শ্রাবন মাসে ভরা লদী
ছলাক ছলাক বয়
চোত্ বৈশাখে শুকাই গিয়ে
ডাঙার পারা হয় গো
ডাঙার পারা হয়
ই লদীটার পারে হামার ছোট্ট চালাঘর
পড়শি যারা তারাই আপন
ল ইত হামার পর
গো লইত হামার পর…