Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » হলো আবার দেখা || Samarpita Raha

হলো আবার দেখা || Samarpita Raha

সায়ন্তনীর সাথে প্রেম শুরু অমলের সেই কলেজ জীবন থেকে।
ওদের একে অপরকে ছাড়া ভাবা যেত না।কপোত -কপোতি বলতে ওদের বোঝাতো।ওদের সম্পর্কের মাঝে কোনদিন ঝগড়া ছিল না। সুসম্পর্ক বলতে ওদের উদাহরণ মনে আসে।
ওরা এক সাথে বি- এস- সি থেকে এম- এস- সি পড়ে। দুই বাড়িতে ওদের বন্ধুত্বের কথা ভালোভাবে জানে।
ওদের যুগল জুটি দেখে কেউ কোনদিনও ভাবেনি যে ওরা আলাদা হয়ে যেতে পারে। কথাতেই আছে “জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে… তিন বিধাতা নিয়ে। সায়ন্তনী এরপর উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষিকা হয়। কিন্তু অমল বেকার। চাকরির চেষ্টা করলেও কিছু পাচ্ছে না।
সায়ন্তনীকে তার বাবার পছন্দের ছেলের সাথে বিয়ে দেওয়া হয়। । সায়ন্তনীর বিয়ের পরে অমলের সবকিছুই এলোমেলো হয়ে যায়। ।
চাকরির জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করতে থাকে । তাকেতো প্রেমে আঘাত খেয়ে দেবদাসের মতো জীবন হলে চলবে না। বাবা ও মায়ের প্রতি কর্তব্য আছে। ওনারা বলেছেন বাবু চেষ্টা কর ঠিক কিছু পেয়ে যাবি। বাড়ি ভাড়া,ও বাবার পেনশন আছে ঠিক চলে যাবে। আত্মহত্যা করিস না।এই জীবনে নাই বা করলি বিয়ে!!
বাবা ও মায়ের আশীর্বাদ আছে ও পড়াশুনাতে বেশ ভালো। কেমিক্যাল বায়োলজি নিয়ে রিসার্চ করার সুযোগ পায়।প্রত্যেক মাসে গভর্নমেন্ট থেকে যা পায় তাতে হয়তো সংসার চলে যেত। কিন্তু বিবাহিত জীবনে দিনের অধিকাংশ সময় ল্যাবে কাটানো, পিছুটান সমস্যা করত। পাঁচ বছরের মধ্যে ডক্টরেট ডিগ্রি পেয়ে যায়। বর্তমানে ভাগলপুরে এক কলেজে পড়াতে শুরু করেছে। প্রচুর কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা পড়ানোর জন্য বলেছে। একটি মিষ্টি মেয়ে একদিন ক্লাস শেষে করিডোর দিয়ে যাবার সময় বলে just a minute Sir…অমল বলে কিছু বলবে??
আমি প্রিয়দর্শিনী মিত্র।
হ্যাঁ কি বলবে বলো।
অমুদা আমাকে চিনতে পারছেন না!
অমল বলে কে তুমি?
আমিতো সায়ন্তনীর বোন।
অমল বলে তোকেতো ছোট্ট দেখেছি।কি করে চিনব বল। এখানে কথা বললে কে কি ভাববে। তুই এই কার্ড রাখ।ফোন করিস।
অমল বাড়ি গিয়ে ছাদে ঘুরছিল। হটাৎ ফোন বাজে।
হ্যালো করতেই সায়ন্তনীর গলা। প্রিয়দর্শিনীকে তুমি পড়াবে অমল।
আরে তুমি থাকতে অমল কেন।
ভাগলপুরে কবে থেকে আছো?
বিয়েতো হয়েছিল শান্তিনিকেতনে।
তুমি আসবে অমল আজকে।বড্ড দেখত ইচ্ছে করছে অমল।
অমল বলে তোমার স্বামী কি ভাববেন।
অনেক অনুরোধ করার জন্য অচেনা জায়গায় অনেক পথ ঘুরে হাজির হয় অমল। অমল মন শক্ত করে সায়ন্তনীর সুখের ঘর উঁকি দিতে গিয়ে থমকে যায়। সায়ন্তনী হুইল চেয়ারে বসে। প্রিয়দর্শিনী ঠেলে নিয়ে আসছে। সায়ন্তনী বলে তোমার এতো সময় লাগল , কিন্তু দশ মিনিটের পথ, তোমার যা ঠিকানা।
অমল অবচেতন মনে বলে গুগল ম্যাপ ঘুরিয়ে এনেছে। অনেক পথ ঘুরে তারপর এসেছি।
সেই রাতে অমল থেকে যায় সায়ন্তনীর কাছে।ওর বিবাহিত জীবনের কাহিনী শুনতে শুনতে রাত পার হয়ে যায়। বিয়ের তিন মাস বাদে সায়ন্তনীর বাপের বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ির সবাই উত্তরাখণ্ড বেড়াতে গিয়েছিল। সেদিন সায়ন্তনী ও প্রিয়দর্শিনী ছাড়া সবাই ধসে মারা যায়।তারপর থেকে ভাগলপুরে বর ও শ্বশুরের পারিবারিক ব্যবসা সামলাচ্ছে।দুই কুলে বোন আর সায়ন্তনী ছাড়া কেউ নেই।
কিন্তু সায়ন্তনী তোমার পা!
হুইল চেয়ার কেন?
বাথরুমে কয়েক দিন আগে পড়ে হাড়ে চিড়, লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেছে। কাজের মানুষ,ঘরে শুয়ে থাকলে চলবে না।তাই হুইল চেয়ারের শরণাপন্ন।
এক রাতে সব কথা শেষ। পুরানো প্রেম অনেক দিন অনেক পথ ঘুরে আসে।
সায়ন্তনীর ও অমলের বিয়ে হয়।ব্যবসা এখন সামলাচ্ছে অমলের বাবা ও সায়ন্তনী।ঘর সামলাচ্ছে অমলের মা । দুই বোনে আজ খুব খুশী। নতুন করে মা ও বাবা পেয়েছে।
সায়ন্তনী ও অমলের সংসারে শুধুই সুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress