Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » বসন্তের ভিন্ন রঙ || Samarpita Raha

বসন্তের ভিন্ন রঙ || Samarpita Raha

বাবা ??
“জলখাবার খাওনি “?
ও- হো একদম ভুলে গেছি।
কতবার বলে গেলাম জলখাবার খেয়ে নিও।
তুমি তার মানে প্রেসারের ওষুধ খাওনি??
জিব কাটলে চলবেনা।
আচ্ছা বাবা তুমি সত্যি ডাক্তারতো??
কেনরে পাঁজি মেয়ে?
তোর কোনো সন্দেহ আছে?
হি- হি করে হেসে বলি তুমি হলে
নামকরা গাইনো ডাক্তার মিহির দাস।নিজের শরীরের দিকে নজর দাও ।
গতকাল ননদ একগাদা কথা শুনালো।তোমার দিকে খেয়াল রাখিনা।আচ্ছা বাবা তুমি ননদকে বলোনিতো??
আমি তোমার অযত্ন করি।
“বাবারে রক্ষা কর ,তোর যত্নের ঠেলায় অক্কা পাব কোনোদিন”।
“শুনছ বাবা”,তাড়াতাড়ি স্নান সেরে ভাত
খেয়ে ওষুধ খাও।

তোর শাশুড়ি যখন চলে যায় তোর ননদ মৌরির বয়স পাঁচ আর তোর বর জোয়ান সাত ।।
তোর শাশুড়ির সাথে জোর করে বিয়ে দিয়েছিল।যাকে বিয়ে করবার ইচ্ছে হয়েছিল , বাবার ভয়ে বলতেই পারিনি।তারপর তিনি ক‍্যান্সারে চলে গেলেন। যাঁকে পছন্দ ছিল,তাকে খুঁজলেনা কেন??
“ন‍্যাড়া বেলতলায় একবার যায় বুঝলি”।
তুমিতো ছেলে ,মেয়ের কথা ভেবেই বিয়ে করতে পারতে।তারপর তোর শাশুড়ি ভূত হয়ে আমার গলা মটকে দিত।
জানিস ঐ পিছনে পলাশগাছের বেদিতে অনেক্ষণ বসেছিলাম। এই বসন্তের সময় কোকিলের কুহু শুনলে তোর শাশুড়ি কুহু করে ভ‍্যাঙাতো আর আমি চেম্বার থেকে উঠে এসে বলতাম হচ্ছেটা কি??
এইসব স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে
জলখাবারটা খাওয়া হয়নি।
হ‍্যাঁ তোমার ছেলে বলেছিল বাগানের ঐ বেদিটাতে মা বসে থাকত।আর ওরা খেলা করত।পলাশ মায়ের প্রিয়,তাই তুমি মায়ের চলে যাবার পর পলাশগাছটি লাগিয়েছ।
জানিস মা তোকে যেমন মন খুলে সব বলতে পারি,কিন্তু আমার মেয়েকে কোনোদিন কিছু মন খারাপের কথা বলতে পারিনি।জানো বাবা ,আমিও আমার বাবা ও মায়ের একমাত্র মেয়ে ছিলাম।কোনদিন বুঝিনি বাবা ও মায়ের নিজস্ব জীবন থাকতে পারে।ঐ বিয়েরপর বুঝতে শিখেছি।তুইতো তাও শিখলি আমার মেয়েটা ভাব,তোকে কেমন জুলুম করে ঐ বিদেশ থেকে।আমার একাকিত্বের জীবন তুই অনুভব করিস,আমার মেয়েতো করে না।তোর শাশুড়ির যখন ক‍্যান্সারে আক্রান্ত ঝুমা বলে আমার পূর্ব পরিচিত নার্স অনেক সেবা করেছিল। ঝুমা অনেক সময় ছেলে ও মেয়েকে দেখাশুনা করেছে।আমার মেয়ের অপছন্দের কারণেই ঝুমা আমার বাড়িতে আসা বন্ধ করেছে।।
বাবা তোমায় একটা কথা বলব তুমিতো বিয়ে করতে পারতে?
আসলে আমার ছেলে মেয়ে অন্য মহিলাকে মা ভাবতে পারতনা। তোমার ছেলে সিঙ্গাপুর।আর ঐ মেয়ে সারাদিন আমায় বলে বাবাকে দেখিসনা।এত খাঁটে কেন?
নিজেতো আমেরিকায় থাকে।বাবা‌র কি কষ্ট, দরকার ওরাতো ভাবেনা।
পলাশগাছের তলায় বসে ভাবছিলাম তোকে আর নাতিকে সিঙ্গাপুর পাঠিয়ে দেব।
আমার স্বার্থে তোকে আটকে রেখেছি।
আর তুমি?ঐ বৃদ্ধাশ্রমে চলে যাব।
ঐ পলাশগাছ?শোনো আমার ছেলে আর আমি এখানেই থাকব।তবে তোমার বিয়ে দেব।আমার এখন বাষট্টি,আর বিয়ে?তোমার দেখাশুনার জন্য এক মহিলা রাখব ভেবেছি।
কিন্তু কোথায় কি বদনাম হবে?তবে সেটা তোমার মেয়ের মাথায় এসেছে।
ওই এই বুড়োতে কি বদনাম?
তুমি বুঝবে না বাবা,যা জগতে চলছে।।অর্থ দেখলেই ফাঁসিয়ে দেয়।
হঠাৎ একদিন এক পিসি এলেন,পঞ্চাশ-বাহান্ন।উনি নার্স,। পিসি চলে যাবার পর বাবা আমায় বললেন সোমা আজ যিনি এসেছিলেন তাকে যদি বিয়ে করি।ও ডিভোর্সি।বাবা ,মায়ের একমাত্র মেয়ে।আচ্ছা উনি সম্পত্তির লোভে বিয়ে করবেননা তো? নারে,ও বলেছে বিয়ে করতে রাজি হবে যদি আমার সম্পত্তি নাতিদের দিয়ে দিই।
৬ই ফাল্গুন১৪০৮বৌমা ,”শ্বশুরের বিয়ে দেয়”।বিয়েতে প্রচুর লোক নিমন্ত্রণ হয়।নতুন মা খুব ভালো।ননদ শুধু বলেছিল কাজটা কি ঠিক করলি?
আজ বাবা ও নতুনমার ১৮বছরের বিবাহ বার্ষিকী বার্ষিকি।”মনের রঙে মাধুরী মিশিয়ে আজ শ্বশুরের বিবাহবার্ষিকীতে বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানালাম”।
আমার ছেলে বলে দাদু আর ঠাম্মিকে দেখে তোমার শেখা উচিৎ,কি করে প্রেম করতে হয়।আমি কান পেতে শুনি,ভেসে আসে সুরেলা কন্ঠ–
“আসে বসন্ত ফুলবনে সাজে বনভূমি সুন্দরী”
আমার বর বলে আরে বেটা তোর দাদুর
মাকে আমি বিয়ে করেছিলাম।কেনগো বাবা ,মাকে এরকম বলছো?দাদুর বিয়ে দিয়েছিল বলে।বর হাহাহা করে হাসতে হাসতেই বলে”চল ফাগুনী পূর্ণিমার রাতে পলাইয়া যায়।”আমার ছেলে বলে যাও না কে তোমাদের বারণ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress