Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ২৯শে ফেব্রুয়ারি || Samarpita Raha

২৯শে ফেব্রুয়ারি || Samarpita Raha

এই লিপি ঘুম থেকে ওঠ মা।
“আজ যে তোর জন্মদিন”।
দাদা ও বলছে ওই বনু কি নিবি বল?
আমি ঘুম চোখে বলি দাদা জ্বালাস না।জ্বালাবো না মানে প্রতি চার বছর অন্তর তোর জন্মদিন হয়।চোখ কচলাতে কচলাতে উঠি ঘুম থেকে।
“ও আজ ২৯শে ফেব্রুয়ারি,আমার জন্মদিন”।উপহারে ও শুভেচ্ছার ছড়াছড়ি।আমার কলেজে যেতে সুবিধা হবে তাই শুনলাম দাদা আমায় স্কুটি দেবে।আজ বিকেলে তার ডেলিভারি।

দাদা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার,ভালো কোম্পানিতে চাকরি করে।বাবা ও মা ব‍্যাঙ্কে কাজ করেন।তাইতো স্বচ্ছল পরিবারের আদরের দুলালি আমি।মা বললেন আজ আমরা মালঞ্চ রেস্টুরেন্টে খেতে যাব রাতে।তাই সারাদিন হালকা খাবার।একদিন বাড়তি পাবার আনন্দ,তার মধ্যে আমার জন্মদিন।
আজও দু হাজার কুড়ি,২৯শে ফেব্রুয়ারি।একগাদা শালিকের কচড় কচড়ে ঘুম ভাঙল।চারদিকে প্রতিধ্বনি হচ্ছে “শুভ জন্মদিন লিপি”।না না বলে ধড়ফড় করে উঠেই কাগজ কলম নিয়ে লিখি,আজ
সেই অশুভ দিন।দুই হাজার চার থেকে আমার কোন জন্মদিন নেই।

দাদা তুই কোথায় গেলি রে!!!
সবাই ভাবছেন দাদার কোন দুর্ঘটনা হয়েছে।
তা হলেও জানতে পারতাম দাদা নেই।

আমাদের রেস্টুরেন্টে বসিয়ে বলেছিল দাদার পেট ভরা,খাবার ইচ্ছে নেই।তোমরা আনন্দ করো।আমি বনুর স্কুটিটা নিয়ে আসি।আমরা খাবার খেয়ে বাড়িতে চলে গিয়ে, দাদার অপেক্ষা করতে থাকি।কানে বাজে আজ ২৯শে ফেব্রুয়ারি,একটা বাড়তি দিন।স্কুটি আসবে,কি মজা।

“রাত একটা”—মা দাদাকে ফোন করে।
সুইচ অফ।
তারপর পুলিশ ,থানা কোন খোঁজ আজ অবধি পাই নি।

বাবা ও মা চাকরির থেকে অবসর নিয়ে দাদার ফিরে আসার দিন গুনছে।”বাবা ও মায়ের”— ছেলের কষ্ট ভুলবার জন্য জামাই ঘর জামাই থাকছে।

এরজন‍্য আমার শাশুড়িকে অসংখ্য ধন্যবাদ।তিনি এতটাই উদার মনের মানুষ,বিয়ের পর আমায় বলেছেন ,আমার তো দুই ছেলে, তুমি মার কাছে গিয়ে থাকো।তাই আমি বিয়ের পর স্বামী ও ছেলে নিয়ে বাপের বাড়ি থাকি।

এখন সকাল সাতটা ,ছেলে বলে মা আজ ২৯শে ফেব্রুয়ারি,একটা দিন বাড়তি দিন।আমি আজও একটা ফোনের অপেক্ষায় “শুভ জন্মদিন”বনু।আমি লিখছি আমার জীবনের গল্প,বাবান জ্বালিও না।মা ,জ্বালাচ্ছি না ,তোমার ফোন।
কে করল রে?
একটা কাকু।

হ‍্যালো হ‍্যালো–ক্রিং ক্রিং
বনু আমি দাদা,শুভ জন্মদিন।না না দাদা শুভ নিরুদ্দেশ দিন।আমি আসছি রে।
“মা ও মা “,”বাপি ও বাপি “দাদা ফিরছে ।দাদা ফিরছে।
তারপর ধাক্কা মায়ের আর তারপাশে বাবা,বর ছেলে দাঁড়িয়ে।
সবাই “শুভ জন্মদিন” বলে।
কি শুনছে এতদিন পরে!!!
পাশে কে দাঁড়িয়ে ভদ্রলোক??
মুখটা বড্ড চেনা।মা বলে এই নে তোর সবচেয়ে প্রিয় পুরস্কার।গমগমে গলায় বলেন” শুভ জন্মদিন বনু”।দা–দা তুমিআছো?
আর শুনলাম দাদা দাদা করে আমি বিগত একমাস ধরে হাসপাতালে ছিলাম।তারপর বাবার কি মনে হয়,সব পেপারে দাদার নিরুদ্দেশের ছবি দেন।ঐ দেখে বৌদি দাদাকে নিয়ে আসেন।দাদার এক অনিচ্ছাকৃত লম্বা ইতিহাস ।যে ছিল নির্জনে।তাই তো বলি আমার দাদা কি করে বাবা ,মা ও আদরের বনুকে ভুলে যায়।
গমগমে গলায় আমার ছেলে বলে দিদুন আজ কি জানো??
বাড়তি দিন!!
না না সোনা আজ তোর মায়ের জন্মদিন ।আমি বলি না না মা আজ তোমার ছেলের ও জন্মদিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress