Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » কল্পকথা || Manisha Palmal

কল্পকথা || Manisha Palmal

লালমাটির দেশ বড় মায়াবী…বড় জাদুগরী। এর জাদুতে যে ধরা পড়েছে তার আর নিস্তার নেই।কাঁসাই তীরের এক সমৃদ্ধ গ্রাম ধবনী ….গ্রামে ঢুকতেই বাঁ দিকে কটা পোড়া মাটির দেবদেউলের ধ্বংসাবশেষ। সারা গ্রাম জুড়ে ই নানা প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ….কোথাও বাড়ি …কোথাও দেব দেউলের ।নদীর পাড়ে দিগন্ত বিস্তৃত সবজি খেত। কোথাও বা সরষের হলুদফুলে মৌমাছির গুঞ্জন । মটরশুটির বেগুনী ফুলে প্রজাপতির সোহাগ যাচা।
একটু এগিয়ে নদীর দিকে গেলে দেখা যায় যে ন দীর বুকে চর জেগেছে…..সেখানে কটা খেজুরপাতার ছাউনি র অস্হায়ি চালা॥
এখানে খেজুর গুড় কারিগরদের অস্হায়ী আস্তানা । শিউলিরাএখানে খেজুররস জ্বাল দিয়ে নলেন গুড় ও পাটালি তৈরীক‌রে….গুড়ে র গন্ধে ম ম করতে থাকে চারপাশ। নদীর জলে ছোট্ট ছোট্ট মাছ খেলা ক‌রে….ধ্যানী বক এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকে।জলফড়িং তির তির ক‌রে জল কেটে এগিয়ে চলে….পানি কাক দূরে নদীকূলের বট গাছের ডালে বসে ডানা শুকায়….”চাকা গড়া লে ” অস্তগামী সূর্যের আলো ডানা য় মেখে বকের ঝাঁক উড়ে চলে পশ্চিম দিগন্তে……বকের পাখায় দিনান্তের শেষ আলো টুকু মুছে যায়….নেমে আসে মায়াবী আঁধার….দূর গ্রাম থেকে ভেসে আসেমন্দিরে র সন্ধারতির ঘণ্টা ধ্বনি ……..!
এই গ্রামের শেষে বিরাট বাঁধ….ফুলসায়র…. টল টলে জলে ভরা এক বিরাটজলাশয়।পদ্ম…শাপলায় আলো হয়ে থাকে জলতল॥ বাঁধের পাড়ে ভাঙা মন্দির একটা. ….ভালো ক‌রে লক্ষ্য করলে বোঝা যায় অলংকরনে র সৌন্দর্যে তা যেকোন বিখ্যাত
মন্দির কেও হারিয়ে দিতে পারে।পোড়া মাটি ও পংখের অলংকরন ….এই ভাঙামন্দিরের কাহিনীই শোনাবো….এক শিল্পী র প্রথম স্বপ্নে র গল্প….স্বপ্ন ভঙ্গের গল্পও॥
জমিদারের শ্যামরায় মন্দির তৈরী করতে এসেছিলো সূত্রধর সম্প্রদায়ের এক শিলপী ।
বিষ্ণু পুর থাকের নামী ওস্তাদ রঘুর নাতি…….শ্যাম।
কষ্টিপাথরের মূর্তির মত সুগঠিত চেহারা…মুখে মিষ্টি হাসি। ব্যবহার টিও খুব সুন্দর । পোড়া মাটি …পংখের মিহি কাজে খুব দক্ষ। ও বিষ্ণু পুর রাজের মন্দির তৈরীতে যাবে তাই রঘু ওকে এই মন্দিরের অলংকরনে র দায়িত্ব দিয়ে পরীক্ষা করতে চেয়েছেন ॥নবীন শিল্পী আপন মনে র মাধুরী মিশিয়ে রচনা ক‌রে চলে এক কাব্যগাথা।কিন্তু হঠাৎ ঘটে ছন্দ পতন . …গ্রামের এক সম্পন্ন জোতদারের মেয়ের প্রেমে পড়ে নবীন শিল্পী…….এ যে অন্যায়…..শিল্পী যে অন্য জাতের! জোতদারের আত্মীয় রা জমিদারের কাছে নালিশ জানালো। জমিদার শিল্পীকে বললেনতাড়া তাড়ি কাজ শেষ ক‌রে দেশত্যাগ করতে।
সেদিন ছিল বাসন্তীপূর্নিমা । মন্দির নির্মাণ শেষে জমিদার শিল্পীকে পুরস্কৃত করেছেন….সম্মান দক্ষিনা ও উপহারে ঝুলি ভরিয়ে দিয়েছেন ।
এবার বিদায় নেবার পালা…..জমিদারগিন্নী র কেমন যেন মায়া পড়ে গিয়েছিল ছেলেটার ওপর…এক বছর তো কম সময় নয় ।যাবার সময় কেন জানি না ওঁর মনটা কু ডাকছে…..বার বার ক‌রে বললেন….রাস্তাভালো নয়…সন্ধে র আগেই যেন সরাইখানা য় বা কোন গৃহস্হের ভদ্রাসনে আশ্রয় নে য় ॥
দুদিন পরে খবর পাওয়া গেল ঠেঙ্গাড়ে র হাতে মারা পড়েছে নবীন শিল্পী! খবরটা পেয়ে জোতদার কন্যা বিশাখা স্তব্ধ হয়ে যায় …..পরের দিন ফুলসায়রের জলে ভেসে ওঠে ওর প্রাণ হীন দেহ !…জলে ডুবে আত্মহত্যা ক‌রেছে ও….ওকে যে শ্যাম বলেছিলো বিষ্ণু পুর থেকে ফিরে এসে ওকে নিয়ে যাবে জীবন সঙ্গী ক‌রে……!সেই থেকে সবাই এ বাঁধ কে দুখসায় র ও বলে॥ জন শ্রুতি যে ঠেঙ্গাড়ে রা নয় জোতদারের পাঠানো লেঠেল দের হাতেই মারা পড়ে শ্যাম. …..!
এই করুণ কাহিনী মন কে বিষাদে ভরিয়ে তুললো !
ভাঙা মন্দিরের অলিন্দে দুখি বাতাস টা যেন গুমরn গুমরে কেঁদে উঠে জান তে চাইছে….কেন …..কে.ন ……কেন ? ll

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *