কুঠিঘাটের কাহিনী
সুবর্ণরেখার আঁকা বাঁকা প্রবাহ পথ,পরানকথার নকশীকাঁথায় মোড়া । নদী তার আপন খেয়ালে বয়ে চলেছে,,,,,,প্রতি বর্ষায় দুকূল প্লাবী বন্যায় ভাসিয়ে দেয় আবার ফিরে আসে তার নিজের পথে॥
নদীকূলে দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ মাঠ!কোথাও বা ঘনসবুজ বনানী!খোয়াই টাড়ে র তানা বানায় বোনা
অপরূপ ভূপ্রকৃতি,,,,,মন ভরে ওঠে!
এই নদীর একটিঘাটের নাম ”কুঠিঘাট” কোন সুদূর অতীতে এখানে ছিল এক নীলকুঠি,,,,,কুঠির ঠিক পেছনেই নদীখাত! নদীর খাতে নামতে গেলে প্রায় তিরিশটি সোপান ভাঙ্গতে হয় ! নদী মীনফসলে সমৃদ্ধ! দন্ডছত্রী মাঝিদের একাধিপত্য এখানে।তারা নৌকো তে নদীপারাপার করে,,,,,মাছ ধরে ,,,নদীর নুড়ি বালি বয়,,,,,নদী এখানে মাতৃস্বরূপা॥নদীর ঘাটে এক জাগ্রত কালী মন্দির,,, মন্দির লাগোয়া শিবমন্দির!পাশে এক পরিত্যক্ত রাধাবল্লভ মন্দির॥
নদীর ঠিক গায়ে ,,নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষের পাশেই এই ভাঙ্গা দেব দেউল ! ভেঙ্গে পড়েছে এর থাম ,,,,পলস্তারা খসে পড়েছে,,,,,!দ্বিতল মন্দিরের ভাঙ্গা অলিন্দে দাঁড়িয়ে দূরে নজর ছড়িয়ে দিলে দেখা যায় নদীর বিরাট বিস্তার,,,,,,।মাছ ধরা নৌকা গুলোদূরে দূরে ছোট ছোট বিন্দুর মতো দেখা যাচ্ছে।নীল কুঠির ভাঙ্গা থাম ,,অতীত স্মৃতি কে মনে করায় ॥
ধীরে ধীরে দিনমণি অস্তাচল গামী হন। নদীঘাটের বিরাট অশ্বত্থ গাছ দীর্ঘ নিঃ শ্বাস ফেলে তার ক্লান্ত শাখায় ! গাঙ শালিখের ঝাঁক উড়ে যায় পশ্চিম দিগন্তে,,,,,,,,,মৃদুমন্দ বাতাস বইতে থাকে,,,,, দূর থেকে গ্রামের সন্ধ্যার শঙ্খধ্বনি ভেসে আসে ,,,,,,,,আউল বাতাস সেই ধ্বনি কে বয়ে নিয়ে চলে নদীর চরায় ,,,,,সবুজ মাঠে,,,,,রাক্ষসীবেলার লালিমা চরাচর কে ধীরে ধীরে অন্ধকারের জাদুগরী চাদরে ঢেকে ফেলতে থাকে ,,,,,,,যেন
বাজে বায়ু আসি,
বিদ্রূপ বাঁশি,
জীর্ণ ঘাটের পাটে,
নির্জন ঘাটে রাত্রি নামিল ,
একক কাকের ডাকে॥