আকাশ দেখে মা বলেছিল বৃষ্টি হবে
অনেকদিন পর মেঘের গর্জনে বৃষ্টি এল,
ছোট বড় সব রাস্তা ধুয়ে পরিকীর্ণ
বাতাবি লেবু ফুলের গন্ধ শুঁকে প্রজাপতির
ওড়াউড়ি ; মা জানে
প্রতিটি ধ্বনি থেকে পুঞ্জীভূত শব্দ কী করে উচ্চারিত হয়
প্রতিটি জীবনের কঠিন সব বন্ধুর পথ
মিশে যায় একাকিত্তের ঠিকানায় ।
গাছের মগ ডালে যখন দাঁড় কাক ডাকে
তখন কোনো অমঙ্গল বয়ে আনে
আবার দুটো শালিক দেখে জোড় হাত যখন
কপালে ঠেকায়, রামধনু খেলে যায় শ্যামলা মুখে ।
সারাদিন নি:শব্দে রোদের ভিতর
সংসারের যাবতীয় কাজ সেরে
ক্লান্ত শরীরে, গোধূলির ম্লান ছায়ায়
পরিচিত পায়ের শব্দের প্রতীক্ষায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে
মা জানে দীর্ঘায়িত পথে
পায়ের কতটুকু রক্তক্ষরণে
সংসারের মুখে হাসি ফোটে ।
মা জানে হরীতকী গাছের নতুন কুঁড়িতে রোদ লাগলে
কাশফুলেরা সাদা ডানা মেলে
নদীর ঢেউয়ে কী করে জোয়ার আসে আর
পুলিন সৈকতে তার চিহ্ন এঁকে দেয় ।
আজ দীর্ঘ চল্লিশ বছর পর এখনও
গোধূলি ঘনালে জানালা খুলে
অশীতিপর বৃদ্ধা মা, ছেঁড়া সূর্যাস্তের অস্পষ্ট আভায়
পথ চেয়ে বসে থাকে আর
এখনো শোনে পরিচিত পায়ের শব্দ ।