Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ছাদ- বারান্দার কথকতা || Manisha Palmal

ছাদ- বারান্দার কথকতা || Manisha Palmal

আমার দক্ষিণের বারান্দা সাথে আলাপন ছাদের মনোকষ্টের কারণ হয়েছে! গম্ভীর দুঃখী মুখ করে সে আমায় অভিযোগ করে—- তোমার অসময়ের সাথী আমি আমাকে না দেখে তুমি তোমার দক্ষিণের বারান্দার ভালোবাসায় মাতোয়ারা !তাকে সাজানো-গোছানো তার সাথে গল্পকথায় সময় কাটানো! আমি তো তোমার প্রাত্যহিকতায় জুড়ে রয়েছি —তাই তো আমার কোন কদরই নেই।
বুঝলাম অভিমানের পাল্লা ভারী—-আমি শুরু করলাম ছাদের সাথে আলাপ প্রলাপ। বলি— তুইতো আমাকে সব সময় সঙ্গ দিস! একা থাকার কষ্টটা বুঝতেই দিস না তোকে কি করে আলাদা করে বোঝাতে হবে? তুই তো আমার ঘর বন্দীর জগত। এখানে দাঁড়িয়ে ই তো আমি পুরো প্রকৃতির সঙ্গ পাই। চাঁপা শ্বেতশিমুলের পাখিদের মজলিস, দূরে ঝিল পাড়ের পাখপাখালির ঘরগেরস্তি। নয়ানজুলিও ঝিলের জলের কচুরিপানা শাপলা দামে জলপিপি পানি কাকের টহলদারি, মাছরাঙাদের হইচই সবই তো তোর জন্যই দেখতে পাই! রেলিং এ বুক ঠেকিয়ে দূরে দৃষ্টি ছড়িয়ে দিলে বড় রাস্তা , তার গড়ানে দক্ষিণ দিগন্ত সীমা পর্যন্ত লালমাটিয়া পথ, মাঠের মাঝে ঝিল সব, সবই তো দেখি তোর সৌজন্যে! তুই আমার যাপনের সঙ্গী, তোকে ছাড়া আমি অসম্পূর্ণ! আমার বিষাদী মনের সান্তনা সঙ্গী তুই! যখন মন খারাপের চাদর আমাকে জড়িয়ে ধরে তোর এই বিরাট বুকে তুই আমাকে আঁকড়ে ধরিস আমি আবার নিজেকে খুঁজে পাই! আমার ঠাকুর ঘর এই ছাদে। বিহান সাঁঝের চরাচরের প্রার্থনা বড় সুন্দরভাবে চোখে পড়ে ঠাকুর ঘর থেকে। রবি সোহাগে প্রাচী কপোল যখন রাঙ্গা হয়ে ওঠে, কিংবা অস্তরাগের রাক্ষসী লালিমায় যখন পশ্চিম দিগন্ত রক্ত রাঙ্গা—– আমি দুচোখ ভরে তার সৌন্দর্য উপভোগ করি তোর সাথে! মায়াবী ভোরের আলো ছায়া ওড়নায় ঢাকা ভোর, ঘুঘু দম্পতির সোহাগের খেলা দেখলে মন ভরে যায়। আমার চাঁপা গাছে ফিঙে দোয়েলদের দাম্পত্য কলহে সারা ছাদ যেন সরগরম থাকে। এক এক সময়ে রূপের পরিবর্তন দেখে অবাক হতে হয়। আকাশ যখন মেঘের ঘোমটায় মুখ ঢাকে পুঞ্জ পুঞ্জেকালো মেঘে ছেয়ে যায় সাদা গগনপট—- ওহ্ !কি অপূর্ব দৃশ্য! তার মাঝে মাঝে ক্ষণলাস্য নটীর মত বিদ্যুতের চমকে আকাশ এফোঁড়-ওফোঁড়। ঝিমঝিম করতে করতে দূর দিগন্ত সীমা থেকে বৃষ্টির আগমন মনকে আনন্দে ভরে দেয়—- সবই তো তোর জন্য রে!
নিদাঘ দুপুর তীব্র দাবদাহে যখন জ্বলে ,চাঁপা গাছে শ্বেত শিমুলের ডালে নারকেল গাছের পাতার আড়ালে বসে বেনেবউ বুলবুলির গাংশালিক হাঁপাতে থাকে, মাঝে মাঝে কুবোর বিষন্ন ডাক মনকে বিষাদে ভরে দেয়। নিঃশব্দ দুপুরে দূর থেকে ভেসে আসা চিলের তীক্ষ্ণ স্বর— মন ভেসে চলে কোন অচিনপুরে—-!
তুই ই তো আমার দিবারাত্রির যাপন সঙ্গী— তোকে বাদ দিয়ে কি আমার যাপন চলে???

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *