তোমার হাতে দেব তুলে কিছু
শুভ্র জলজ ফুল, হাওয়ার টানে
ওরা ফিরে যায়, হাওয়া বদলের মরসুম,
আকাশে মেঘ বদলের মরসুম, কালো মেঘ
ভাসতে ভাসতে পেঁজা তুলোর মত পাহাড়ে
আটকে থাকে, দূরে কাশ ফুল ফোটে,
সাদা হাঁসেরা যেন মাটিতে খেলা করছে,
সব ঘরে ফেরার প্রস্তুতি
আমার প্রতীক্ষায় সবাই জেগে আছে,
আমার ঘরে ফেরার টান, দাঁড়কাক
দাঁড়িয়ে ‘কা কা’ করে তার গলা সেধে নিচ্ছে
সেই কাক যেন বড় পরিচিত
গ্রামের কাক আর শহরের কাকের তফাৎ
আমি বুঝি, কাকেরাও পরিচিত গণ্ডি
পেরিয়ে নিস্তব্ধতার আকাশে ভেসে বেড়ায়,
বিলের ধারে এক পায়ে দাঁড়ানো বক
সব চেনা, নিজেদের ঘোর-দোর,
আমগাছ, সদ্য ফোটা ডিমের খোসা পড়ে থাকে, শুভ্র পাখিরা ডানা
মেলার চেষ্টা করে ।
আমার শৈশব,
আমার হারিয়ে যাওয়া সময়
ক্রমাগত বুকের ভেতর ঘূর্ণিপাক খায়
আমার এ হাত বহুদিন ছোঁয়নি তোমার হাত
নীরব দর্শক আমি, টানাপড়েনের যুদ্ধে
ছুটে চলেছি এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে
তবুও আজ নাড়ীর টান, ঘরে ফেরার টান
আশৈশব ছেঁড়া ঘুড়ির সুতো ধরে খোঁজে নিশীথে,
অতঃপর নিঝুম রাত গভীর হলে
বাইরে দাঁড়াই একাকি
দেখি নীলাভ আকাশ
উড়ন্ত ক’টি সারস নদীর দিকে চলে যায় ;
ভাবি উন্মুক্ত পাখির মত উড়ে যেতে
ডানা মেলে পৌঁছে যেতে তোমার কাছে
শুভ্র পালকের মত তোমার হাতে তুলে দিতে
কিছু জলজ ফুল, কন্টক বহুল পথে পৌঁছে দিতে
স্মৃতি মাখা কিছু শুভ্র জলজ ফুল
যেখানে চড়ুইয়েরা মিটিং সেরে
পৌঁছে যায় আপন ঘরে
আমিও ফিরতে চাই সেই ঘর, সেই নীরব শান্তির ঠিকানায়।