দরিদ্র ব্রাহ্মণ এক, অজ পাড়াগ্রামে,
অর্ধাহারে অনাহারে , কাটাইত দিন ।
পরমা সুন্দরী কন্যা , ছিল আন্না নামে,
যথাকালে হলো বিয়ে , আড়ম্বর হীন।
পিতারে কাঁদায়ে কন্যা, শ্বশুর আলয়ে,
গেলো চলি অশ্রুজলে,ভাসাইয়া বুক।
মাতা কেঁদে কহে তারে, যাস নি মা ভুলে,
ভগবান যেনো তোরে, দেয় সব সুখ।
বিধাতা সাধিল বাদ ,বছরের পরে,
কপালেতে সুখ নাহি , দুঃখিনী নারী ।
তেইশ দিনের কন্যা, কোলেতে লয়ে,
বিধবার বেশে আন্না,ফিরে এলো বাড়ী।
তাহারে দেখিয়া মাতা, সম্বিৎ হারায়,
আন্নাও মূর্ছা যায় , সদা বারে বারে ।
এ হেন দৃশ্যে পিতার, বুক ফেটে যায়,
আপন জনেরা সবে,হাহাকার করে।
কেহ মুখে দেয় জল, বীজন করিয়া,
চক্ষু মেলি কহে আন্না , কি হবে আমার।
কেমনে পালিবো কন্যা,দাও গো বলিয়া,
শুরু হলো বুঝি মোর, দুঃখের আঁধার।
এ হেন সময়ে তার, প্রতিবেশী জন,
মস্তকে রাখিয়া হাত,কহিল তাহাকে ।
পঞ্চম বর্ষীয় পৌত্র, যাদু বাছা ধন,
বাগদত্ত করিলাম , সবার সমীপে।
হেন বাক্যে হৃদিমাঝে, আশার প্রদীপ,
জ্বলিয়া উঠিল তাহে , আন্না অতঃপর।
ভুলি শোক দুঃখ তাপ, স্বীয় কন্যা তরে,
উঠিয়া দাঁড়ালো দিয়ে,চরণেতে ভর।
কালের প্রবাহে হায়, সবে হয় লীন,
চিরদিন স্থায়ী নয়, এ ভূবনে কেউ।
কালক্রমে আন্না হয়,পিতৃমাতৃহীন,
দুঃখের সাগরে তার,উঠে পড়ে ঢেউ।
শত বাধা অতিক্রমি , দিন কেটে যায়,
বড়ো হয় ধীরে ধীরে, আন্নার দুহিতা।
রূপবতী কন্যা যবে,অষ্টাদশী হয়,
প্রতিশ্রুতি মতো হয়, নব পরিণীতা।
কথা মত প্রতিবেশী, পৌত্র সনে তার,
দিলেন বিবাহ এবে, আন্না কন্যা সনে।
বিধাতা করিল কৃপা, কন্যারে তাহার,
পরম সুখেতে দিন, কাটে বর্তমানে।