খোকা বাড়ি ফিরছে, বাড়ি বলতে
গারো পাহাড়ের শালবন
মেঠো পথ, সুপারি বাগান, আঁশ শেওড়াকে পেছনে
ফেলে সাঁকোয় চড়ে ওপারে যাওয়া ;
বাড়ি বলতে ‘মা’, রাত্রি দ্বিতীয়-প্রহরে ছানি পড়া চোখে
হ্যারিকেন নিয়ে পথ চেয়ে বসে থাকা
দূরে পাতা ঝরা শব্দে ভেসে ওঠে ডাক ‘খোকা এলি ……’
খোকা বাড়ি ফিরছে, বাড়ি বলতে জলের ভেতরে জল, মুখচ্ছবি
ভেসে ওঠা হারিয়ে যাওয়া সময় ;
এত মুঠোমুঠো আম কুড়নোর সময়
এত মুঠোমুঠো শ্যাওলার নীচে চাপা জলে কৈ
এত সব হরিদ্রা শুকনো রোদ, ব্যক্তিগত সুখ দু:খ..
তোমার দুচোখে মেঘ, বৃষ্টি নামে এক পাখি
আমার ওপরে আকাশ, আকাশে শূন্যতা
তোমার নীচে মাটি, মাটিতে স্বপ্ন
আমার দু’হাতে বজ্র, বজ্রে আগুন
তোমার সপ্রাণ শস্য, ওষ্ঠের ঘ্রাণ
আমার দৃষ্টিতে ছায়া, নিদাঘ দগ্ধ প্রাণ ;
তবুও খোকা বাড়ি ফিরছে, বাড়ি বলতে সজনের ফুল
শশা ও লাউয়ের মাচা, আমলকির উৎসব
বাড়ি বলতে লক্ষ্মী পেঁচার ডাক, মনসার ভাসান গান
বাড়ি বলতে হাজার শালিক, হলুদ ঠ্যাঙে নিংড়ায়ে নিয়ে যাওয়া সবুজ প্রেম
বাড়ি বলতে কৈশরের স্মৃতি, ঘুড়ি, লাটাই, বাক্স
সবুজ ঘাস আর মায়ের হারানো আঁচল ।