আজ সবাই মিলে কথার জোরে
ফেলল দেখো আমায় বড়ো করে,
এখন আমার পুতুল খেলা ছেড়ে-
বসালে মায়ের মতো শাড়ি পরে।
পুতুল আমার হাতের পরে কাঁদে,
অতৃপ্ত স্নেহের তীর বুকে এসে বেঁধে,
কিশোরী মন যে ছোটে পদে পদে,
এ বয়সেই সংসার তুলে দিলে কাঁধে?’
এখনও আমার পেলব দুটি হাতে,
পুতুল খেলায় মনটা আছে মেতে,
তবু ঠেলছো আমায় আগুন তাতে-
কি পরমান্ন তুলব তোমাদের পাতে?’
অনেক বছর আগে এমনি করে-
কতো কিশোরীর মনটাকে মেরে,
তুলেই দেওয়া হতো স্বামীর ঘরে;
কন্যা বলেই থাকত তারা ঘোর অন্ধকারে।
যুগের হাওয়ায় জাগছে আজ নারী,
এখন আর নয় সে অতীত আনাড়ি,
শিক্ষিত হয়ে মহাকাশে দিচ্ছে পাড়ি,
তবু কিশোরীর ভুবন বিস্মৃতিতে ভারী।
কন্যা জন্ম নাকি সংসারের পাপ!
তাই কন্যা জন্মে একালেও অভিশাপ,
তবু ঘুরছে মনে প্রশ্ন একটা নিষ্পাপ,
কন্যাহীন পিতা মৃত্যু পরে কেন করে অনুতাপ।
তিন রাত্রি গতে কন্যা করে জলদান,
অনেক পুন্য করলে পিতা কন্যাদান,
পুন্যার্থেই কন্যা সম্প্রদানের বিধান;
ঐহিক,পারলৌকিক উভয়তঃ কন্যার দান।
আর কোর’না কূপমণ্ডুক কন্যারে,
এবার যাবেই কন্যা বিশ্বের দরবারে,
হাজারো প্রাণ ওই ডাকে কাতরে;
‘আয় চলে’ চার দেয়ালের বাইরে’।
বন্দী ছিলো এতো কাল শুধু নারী বলে,
স্বাধীনতা-হীন হয়ে ছিলো সে আড়ালে,
শিক্ষায় চেতনা এই শব্দটাকে সুকৌশলে-
পুরুষের অধিকার ব’লে সব কায়েম করলে।
অনেক দেখি আইন আছে কন্যাদের জন্য,
তবু পুরুষ সমাজ আজও বন্য,
কন্যা,নারীর ধর্ষণ করেই তারা ধন্য;
বিচারে তারা হয়না মানুষ বলে গণ্য।
এবার কন্যা তাই শুধু ঘর না বিশ্ব দেখো,
চার দেয়ালের বাইরের বিশ্বে স্ব-অস্তিত্ব রাখো,
আব্রু রাখতে দুঃশাসনদের রক্ত মাখো,
নিজেকে বাঁচাতে ওই দানবদের মারতে শেখো।
হাজারো দূর্গা কন্যারূপে ঘরে ঘরে,
বিনা স্নেহেই সর্বত্র আজ যুদ্ধ করে,
অবজ্ঞা আর বঞ্চনা সে সইবে না রে;
কন্যারা দূর্গা রূপেই পূজা নেবে স্বাধিকারে।।