Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » লক্ষ্মীর বাহন প্যাঁচা কেন?‌ || Suchandra Basu

লক্ষ্মীর বাহন প্যাঁচা কেন?‌ || Suchandra Basu

লক্ষ্মীর বাহন প্যাঁচা কেন?‌

• লক্ষ্মী ঐশ্বর্যের দেবী। রূপের সঙ্গেও তাঁর তুলনা করা হয়। কিন্তু তাঁর বাহন কি না প্যাঁচা?‌ যাকে রাতে ছাড়া দেখা যায় না। যাকে দেখতেও ততটা সুন্দর নয়।
• কথিত আছে দুর্বাসা মুনির অভিশাপে ইন্দ্র শ্রীহীন হলে সমুদ্রে বসবাস করতে শুরু করেন। দেবী লক্ষ্মী পরে অন্যান্য দেবতাদের আরাধনায় সমুদ্র মন্থনের সময় উত্থিত হন এবং বিষ্ণুর বাহুলগ্না হন। কিন্তু চঞ্চলা দেবী কোন বাহন কে স্থায়ীভাবে নিজের দখলে রাখতে পারেননি। কুমার গুপ্তর মূদ্রায় লক্ষ্মীর পাশে দেখা যায় ময়ূরকে। শশাঙ্ক মূদ্রায় লক্ষ্মীর পাশে হাঁস রয়। নেপালে লক্ষ্মীর বাহন কচ্ছপ। কিন্তু বাঙালির পৌরাণিক মতে হাঁস সরস্বতীর বাহন।ময়ূরের বাহন কার্তিক। বাধ্য হয়ে প্যাঁচাকে বাহন করেছেন লক্ষ্মী।
• আবার বলা হয় ধান বাঙালির কাছে লক্ষী কিন্তু এই ধান ইঁদুরে খেয়ে ফেলে ধানের গোলায় ইঁদুর ঢুকে নষ্ট করে খাদ্যশস্য তাই ধানের শত্রু ইঁদুর। আর ইঁদুরকে খায় প্যাঁচা অর্থাৎ ধানকে রক্ষা করে ইঁদুরের হাত থেকে। ধান যা মানুষের আহার, তার শত্রু ইঁদুরদের সংহার করে সে ধনরক্ষার ব্রত পালন করেছে। এইভাবে প্যাঁচা মানব হিতৈষীর কাজে লাগে।তাই লক্ষ্মী দেবীর বাহন এই রাত জাগা পাখি।
তাত্ত্বিকদের মত হল, মা লক্ষ্মীর অবিশ্যিক গুণ যেমন তপস্যা, ক্ষমা, সেবাভাব, প্রেম, তিতিক্ষা, পবিত্রতা অর্জন করতে চান, তাঁকে অবশ্যই পেঁচার ধর্ম পালন করতে হবে। কী এই পেঁচার ধর্ম?
ধর্মে বলা হয়েছে, যিনি জাগতিক মায়া মোহ উপেক্ষা করে সাধনার ব্রত নিয়ে নির্জনে সেবাকাজে আত্মোৎসর্গে ব্রতী হবেন তিনি শ্রীময়ীর কৃপাদৃষ্টি লাভ করবেন।জাগতিক বস্তু থেকে একটু দূরে থেকে নির্জনে যোগৈশ্বর্য ও সাধন সম্পদ রক্ষা করতে হয়। কোজাগরীর রাতে মা লক্ষ্মী খোঁজ নেন কে জেগে রয়েছে। জেগে থাকা ব্যক্তিকেই তিনি ধনের সন্ধান দেন। পেঁচা প্রতি রাতেই জেগে থাকে পেচক দিনে ঘুমায়। প্যাঁচা যদি দিনের বেলায় বের হয় অন্যান্য পাখিরা তাকে তাড়া করে বলেই অতি গোপনে প্যাঁচা বাস করে।নিদ্রা ও জাগরণ দিয়ে সে পরমার্থকামী সাধক-সাধিকাদের অনুকরণের যোগ্য। পেচক গোপনচারী। অতি গোপনে এরা বাস করে, লোকচক্ষুর অন্তরালে। সাধকের সাধনাও দৃশ্যমান জগতের বাইরে হওয়া উচিত।
ঋগ্বেদে বলা হয়েছে, পেঁচা আসলে যমের দূত। যম অর্থ সংযম, যম মানে ধর্ম। ধনোপার্জনের ক্ষেত্রেও সংযমবুদ্ধি ও ধর্মীয় চেতনা জাগ্রত রাখার প্রতীক পেঁচা। যমদূত পেচক তাঁর নিজের বৃত্তি ও প্রভুর দৌত্যের কথা স্মরণ করিয়ে মৃত্যুচিন্তা ও আত্মচিন্তা জাগ্রত করে সাধকের মনে।
ধনসম্পদ ও ঐশ্বর্যের দেবী মা লক্ষ্মী। জগৎকে আলোকিত করে রাখেন দেবী। গোটা ব্রহ্মাণ্ডের যিনি আরাধ্যা, তাঁর বাহন এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অতি তুচ্ছ জীব এমন কুরূপ পেঁচা কারণ শাস্ত্রকাররা একই সঙ্গে ধনের উপার্জন ও ঐশ্বরিক চিন্তা- দুই গুণ-ই পেঁচকের মধ্যে বিদ্যমান হিসাবে ধরেছেন।সেই কারণেই পেঁচক লক্ষ্মীর বাহন অর্থে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress