ভূতের গল্প
ভূতের গল্প লিখতে বসে স্বচক্ষে ভূত দেখব,
তা কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি।
চিলেকোঠায় দরজা জানলা বন্ধ করে লিখতে বসেছি।
লেখার আগে মনে মনে ভূতের কল্পনা করছি,
এমন সময় মনে হল কে যেন জানলায় টোকা মারছে।আর তারপরেই আচমকা দরজাটা খুলে গেল।লাইটটা নিভে গেল হঠাৎ।
দরজা দিয়ে কে একজন ঢুকে এলো ঘরের ভিতর।এসে বলল,ব্যাটা লেখক,
আমাদের নিয়ে গল্প লিখবি? কি জানিষ আমাদের সম্পর্কে তুই?
আমি আমতা আমতা করছি ভয়ে ,মানে…
– মানে কি,বলবি,আমরা হিংস্র, মানুষের ঘাড় মটকে রক্ত খাই,নাকি সুরে কথা বলি এইসব তো?
আমি বললাম, কিছুটা সাহস সঞ্চয় করে বললাম,তাই তো জানি।
সজোরে এক থাপ্পর পড়ল আমার গালে।
আমাদের নিয়ে মিথ্যের বেসাতি।
আমরা মানুষের ঘাড় মটকে রক্ত খাই?
নাকি,তোরা নিজেরাই নিজেদের ঘাড় মটকে রক্ত খেয়ে আমাদের নামে চালাস?
– তবে যে লোকে বলে?
– লোকে আমাদের নামে দোষ চাপিয়ে নিজেদের অপরাধ আড়াল করে।
– তা কি করে হবে?
– হ্যাঁ তাই হয়। আর একটা মিথ্যে বললে আমাদের নামে, মারব আর এক থাপ্পর।
এক থাপ্পরেই গালটা জ্বলছে,আর একটা
থাপ্পর খাওয়ার কোন ইচ্ছে নেই বলেই আমি চুপ করে গেলাম।
হঠাৎ আলোটা জ্বলে উঠল,দেখলাম ঘরে কেউ কোথাও নেই,শুধু দরজাটা হাঠ করে খোলা।
এরপর আর ভূতের গল্প লেখার সাহস হয়নি আমার।ভয়ে ভয়ে নীচে নেমে এসে দেখি,
গিন্নি ছোট ছেলেকে ভূতের গল্প বলছে।
আমি বললাম, চুপ কর চুপ কর ,ছাতে ভূত আছে।
ছাতে গুম গুম করে, কারও চলাফেরার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিল।গিন্নি তা শুনে ভূতের গল্পকে – গভীর গহন নির্জন অরন্যে শিয়াল আর কুমিরের গল্পে রূপান্তরিত করে ফেললো কায়দা করে।
ছেলে ততক্ষণে ঘুমিয়ে গেছে।
তারপর গিন্নি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল,তোমার গালে ওটা কিসের দাগ গো?
আমি তখন তাকে সব কথা খুলে বললাম।
ততক্ষণে ছাদে ভূতের দাপাদাপি কমেছে।