এস নারী,
আজ তব কানে কানে,
কই কথা প্রাণে প্রাণে ;—
সৃজন-রহস্য-কথা
—-নিখিলের আদিম বারতা |
যৌবনের মায়ালোকে
অনাদি ক্ষুধার সেই অনির্ব্বাণ জ্বালা নিয়ে চোখে
এস নারী, আরো কাছে এস
বুকে বুক রেখে শুধু ক্ষণিকের তরে মোহ ভরে ভালোবেসো |
চুপে চুপে যে কথাটি
শিখাইছে মাটি
প্রতি নবাঙ্কুরে,
ইঙ্গিতে যে কথাটিরে গ্রহতারা বলে ঘুরে ঘুরে
আলোকের অর্দ্ধস্ফুট সুরে,
সৃষ্টির প্রথম-প্রাতে বিধাতার মনে
যে-কথাটি ছিল সঙ্গোপনে,
সে গোপন বারতাটি করিব প্রকাশ,
এস নারী, এল আজ জীবনের দখিনা-বাতাস |
মুখে নয়, শুধু বুকে বুক দিয়ে নয়,
ব্যাঞ্জনা-ব্যাকুল সর্ব্ব অঙ্গ মোর মন প্রাণ দিয়ে
শিখাইব সে রহস্য প্রিয়ে !
জানিবার দুরন্ত আগ্রহে
তোমারও দেহের মাঝে শোণিতের বন্যাবেগ বহে !
যৌবন-সুষমা তব, এ যে সেই বাসনার ভাষা !
এরি মাঝে জেগে আছে নিখিলের অনির্ব্বাণ আশা |
এই তব হেঁয়ালি ভাষায়
সৃষ্টির কামনাখানি নবরূপে ফুটে পুনরায় |
ভয়ঙ্কর ভুখে,
এস নারী অই তব তনুলতা নিষ্পেষিয়া বুকে
কই মোর রহস্য-বারতা ;
জন্মে জন্মে এ দেহের প্রতি অণু-পরমাণু মাঝে বহিয়া
এনেছি যেই কথা,
সে বাণী সুগন্ধ করিয়া অগণন ফাল্গুনের সুরভি নিঃশ্বাসে,
রঞ্জিয়া বিচিত্র বর্ণে, সিক্ত করি সঙ্গীতের আনন্দ নির্য্যাসে,
রূপে রসে অপরূপ করি’
কই ধীরে, — দেহমন এ জীবন — উঠুক শিহরি !
হে প্রিয়া আমার—
তবু যদি আরো কিছু রয়ে যায় বাকি,
অসমাপ্ত যায় কিছু থাকি,
হাস্যে তব, লাস্যে তব, ছলনায় কৌশলে কলায়,
সৌন্দর্য্যের ইন্দ্রজালে মুগ্ধ করি’ দুলাইয়া আবেগ দোলায়
ধাঁধিয়া কটাক্ষপাতে, বাঁধিয়া অচ্ছেদ্য মায়া-ফাঁসে,
সমস্ত চেতনা হরি’ মগ্ন করি’ আলিঙ্গনে, কুহক বিলাসে
উদ্ ভ্রান্ত করিয়া মোরে করিয়া বিহ্বল,
লুটে নিও সকল সম্বল |