চওড়া কাঠের সিঁড়ি গেছে উঠে
ঘুরে-ঘুরে অনেক উঁচুতে |
ধাপগুলো মোড়া কার্পেটে,
পুরানো নয়,
কিন্তু উজ্জ্বলতাও তার নেই |
সিঁড়ির একটি বাঁকে
টুলের ওপরে ব’সে থাকে সশস্ত্র প্রহরী |
বসার ভঙ্গি তার কঠিন,
মুখ নির্বিকার,
যেন পাথরে কোঁদা |
সারাদিন সে থাকে বসে,
যে কাঠের সিঁড়ি ওপরে গেছে উঠে
তারই একটি বাঁকে |
সিঁড়ি দিয়ে ক্কচিৎ একটি-আধটি লোক নামে
ভারী গম্ভীর আওয়াজ ক’রে,
ঝলমলে ঊর্দিপরা
বেয়ারারা নামে ওঠে মাঝে-মাঝে |
শুধু প্রহরী থাকে ব’সে,
আর কাটের টবে
একটি পামের চারা
তার সবুজ পাখার মতো
পাতা বিছিয়ে থাকে |
বিশাল বাড়ির মোটা দেওয়াল ভেদ ক’রেও
বাইরের আওয়াজ এসে পৌঁছয় |
ট্রামের ঘর্ঘর,
আর নগরের অস্পষ্ট গুঞ্জন
আর রোদের আলো
জানালার পুরু কাঁচের ভেতর দিয়ে
ফিকে হ’য়ে গ’লে আসে |
পোষাকের তলায় প্রহরীর বুক কি
ধুকপুক করে ?
পামে চারার পাখা কি নড়ে কাঠের টবে ?
বলা যায় না |
যে বিশাল সিঁড়ি আকাশের দিকে
চেয়েছে উঠতে,
তার তলায় তারা ব’সে থাকে ;—
কাঠের টবে পামের চারা
আর কাঠের টুলে
সশস্ত্র প্রহরী |
তবু হতাশ আমি হই না |
জানি — পামের চারার মধ্যে সংগোপন আছে অরণ্য ;
কাঠের টবে একদিন তাকে ধরবে না !
কাঠের টুলে নিঃসঙ্গ জনতা আছে থেমে
স্তব্ধ হ’য়ে ;
একদিন তার স্থানুত্ব যাবে ঘুচে |
শুধু কাঠের সিঁড়ি
কোনোদিন পৌঁছবে না আকাশে |