যেই এক পলক ফেললাম, দৃশ্য বদলে গেল
রোদ ঝলকাচ্ছিল না? এখন মৃদু চুম্বনের শব্দে বৃষ্টি পড়ছে
সেই বৃষ্টির রং একটি কিশোরীর ঘুমভাঙা চোখের মতন
যে-রাস্তায় ছজন লোক হল্লা করছিল, এখন সেখানে
শুধু এক অন্ধ ভিখিরি
পেয়ারা গাছের ডালটায় তিনটে ছাতারে পাখি নেই,
একটি মাত্র ফড়িং
বদলে যায়, এক পলকে অনেক কিছু বদলে যায়
বিনতা মাসি হাঁটু গেড়ে চোখ বুজে বসে আছেন, আগে তাঁর চোখে
চশমা ছিল না
রশিদ খান হারিয়ে গিয়েছিল, মশমশিয়ে হেঁটে আসছে রশিদ
পাশের তালাবন্ধ বাড়িটায় কেউ গলা সাধছে
মাঠের মধ্যে ফাঁকা মঞ্চ, মুখ্যমন্ত্রী সাপ-লুডো খেলছেন
তাঁর মেয়ের সঙ্গে
একটা ঘুড়ি দুলতে দুলতে গোঁত খেয়ে পড়ল পুকুরে
গেরুয়া পরা ছোট মামা মাথার চুলের মুঠি ধরে কাঁদছেন
ইস্কুলের ঘণ্টা হঠাৎ বেজে উঠল আজ ছুটির দিনে
একটু জিরিয়ে নেবার জন্য চেতন মিস্তিরি বাজাচ্ছে বাঁশি
ব্রিজের ঠিক মাঝখানে গম্বুজের মতন দাঁড়িয়ে আছে নিষ্পলক শেখ সুলেমান
সুনীল গাঙ্গুলির কলমের ডগায় প্রেমের কবিতার বদলে মৃত্যুভাবনা
চেনা মাছওয়ালা ঢোল বাজিয়ে মেতে উঠেছে হরি সংকীর্তনে
বারান্দা থেকে ঝুঁকে আছে যে-মেয়েটি, তাকে ঝাপটা দিয়ে গেল
পলাশ রঙের আলো
বদলে যায়, এক পলকে অনেক কিছু বদলে যায়
কৃষ্ণচূড়া পাতার আড়ালে একটা কোকিল শুধু ডেকেই চলেছে
কেউ সাড়া দেয় না, তবু সে ডাকে।