শিখর থেকে একে একে খসে পড়েছে তারা ।
গহ্বরের দিকে গড়িয়ে যেতে যেতে জিজ্ঞেস করছে, ‘বলো, কেন
কেন অসময়ে আমাদের এই বিনাশ ?’
জানতে চাইছে শিলায় শিলায় ঝল্ সে-ওঠা স্বর :
‘আমরা কি তবে সত্য ছিলাম না আমাদের শব্দে ?
আমরা কি স্থির ছিলাম না আমাদের স্পন্দে ?
আমরা কি অনুগত ছিলাম না আমাদের স্বপ্নে ?
তবে কেন, কেন আমাদের এই— ’
পায়ে পায়ে তিনি এসে দাঁড়ালেন পাহাড়ের কিনারে । বললেন, ‘শোনো
ছোট ছোট সফলতায় অন্ধ
তোমরা সকলেই ছিলে নিজের ভিতরে রুদ্ধ । ’
সকলের দিকে একে একে আঙুল তুলে তিনি বললেন, ‘তুমি ভেবেছিলে
তুমি যতটুকু জানো তার চেয়ে বেশি কোনও জ্ঞান নেই আর
তুমিই পরম আর সমস্ত পূর্ণতা এসে তোমাতেই মেশে ভেবেছিলে
ভেবেছিলে নিমেষেই জিতে নেবে ধনধান্যে অবোধ পৃথিবী
কখন্ও-বা ভুলে গেছ গ্রাসে ভুলেছ সংসারসীমা
আর তুমি
যদিও তোমাকে আমরা আমাদের সকলেরই জানি
লালন করেছ তবু গোপন গোপন অতিগোপন তত-কিছু-গোপনও-না লোল পক্ষপাত
আর আমি, তোমাকে বাঁচাব বলে অতর্কিতে মিথ্যাচারী, বুঝি
তোমরা কেউ জানোনি যে বহুদিন আগে তোমরা মৃত !’
গহ্বরে মিলিয়ে যায় স্বর । স্তব্ধ শ্বাস । তার পর
তিনি ফিরে তাকালেন আমাদের দিকে । বললেন, ‘এবার
আসুন এক শতাব্দী আমরা নীরব হয়ে দাঁড়াই । ’