Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » দ্বীপান্তর || Buddhadeb Guha

দ্বীপান্তর || Buddhadeb Guha

একটু আগে ঝড় উঠেছিল। ভীষণ ঝড়। এত বড়ো বড়ো ঢেউ উঠছিল এই পুরোনো সদাই ঝড় ওঠা সমুদ্রে যে ভয় হয়েছিল এবারে দ্বীপটা ভেসেই গেল বুঝি। যাবেও হয়তো কোনোদিন। কিন্তু এখনও যায়নি।

স্যান্ডপাইপার পাখির বাচ্চাটা পাহাড়ের নীচের ঝোপটার ভিতর থেকে কেঁদে উঠেছিল। একেবারে মানুষের বাচ্চার মতো। আদুরে, জড়ানো, মিষ্টি। আমার তিন বছরের মেয়ে সোহিনীর মতো গলা।

মানুষ কিংবা পাখিরই হোক, পৃথিবীর সব বাচ্চাদের গলার স্বরই বোধহয় একরকম! ওদের গলার স্বরে কী এক গভীর অবলম্বনের সুর বাজে। ওরা যে স্বাবলম্বী নয়, ওরা যে পরনির্ভর, ওরা কাঁদলে

যে ওদের বাবা-মা, পিসি, মাসি দৌড়ে এসে কোলে তুলে নেবে, আদর করবে, একথাটা ওরা ভালোভাবেই জানে! তাই ওরা কথায় কথায় আদুরে গলায় কাঁদে, আদর খাওয়ার জন্যে, চুমু অথবা অন্য কিছু খাওয়ার জন্যে।

নানারকম শব্দ কানে আসে। পরিচিত শব্দগুলোও বিষণ্ণ অন্যমনস্কতার অপরিচিতির ছায়ার মধ্যে হারিয়ে যায়। নানা পাখির, জন্তু জানোয়ারের গলার বিচিত্র শব্দ বিভিন্ন শব্দতরঙ্গে বাজতে থাকে চেতনায়। পাশের ঝর্না থেকে পাথরের উপর জল পড়ার একটানা তরল শব্দ হয়। রাতচরা সামুদ্রিক মাছরাঙা অন্ধকারকে চাবুক মেরে ডেকে বেড়ায়।

আমার আশেপাশে এই মুহূর্তে দ্বীপের মধ্যে অনেক প্রাণ। কিন্তু কেউই কারো আত্মীয় নয়। কারো আত্মার কাছেই কেউ নেই। এরা কেউই কারো কিছু হয় না হবেও না। এই একলা দ্বীপের মতোই এরা সবাই। দ্বীপের মধ্যে দ্বীপ। আমিও চারিদিকে দুঃসহ নির্জনতা, ভুলের ফুলে ছাওয়া কাঁটা ঝোপ, অবুঝ দুর্ভেদ্য নীরবতা, তারই মধ্যে আমি, আমরা, মানুষ অথবা পাখি, ক্লান্ত, বড়ো শ্রান্ত প্রাণগুলি।

এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে কেউ কি যেতে পারে? হয়তো কেউ কেউ পারে। কখনো কখনো।

পাখিরা উড়ে, জন্তুরা সাঁতরে, মানুষরা নৌকোয়।

কিন্তু আমি পারি না। আর পারব না। যদিও-বা পারতাম কখনো। আর সাঁতার পারব না এ জীবনে। অন্য সব দ্বীপের সঙ্গে সব যোগাযোগ আমার ছিন্ন হয়ে গেছে চিরদিনের মতো।

পারব না, কারণ চল্লিশ বছর ধরে যে নৌকোটা বানিয়েছিলাম আমার দ্বীপের তালপুঞ্জর একটি তালের কাণ্ড খুঁড়ে, সেটি ডুবে গেছে। অতল শীতলতার সমুদ্রের গহনে তা ডুবে গেছে। যখন কৃচিৎ রোদ ওঠে, স্বচ্ছ সমুদ্রের তল অবধি দেখা যায়, তখন দেখতে পাই আবার শীতলতার ঢেউয়ের মধ্যে এককালীন উষ্ণ বাহনটি ভেঙেচুরে পড়ে রয়েছে নীচে। মাছের ঝাঁক তাকে ঠোকরাচ্ছে–হাঙর প্রদক্ষিণ করছে তাকে।

তাকিয়ে থাকি, যখন কৃচিৎ রোদ ওঠে, আর ভাবি, যখন রোদ ওঠেনা, নৌকোটার কথা।

ভাঙা নৌকোটার কথা আজ লিখতে বসে দেখি, ভাষাটাও আমার ভেঙে গেছে। লগি দিয়ে যখন জলের তল পাওয়া যায় না, তখন লগি দিয়ে নৌকো বাওয়াও যায় না। অতল জলে লগি মারলে যেমন নৌকো শুধু দোলেই এদিক-ওদিক, লগিটাকে জলের নীচে বেঁকা বলে মনে হয়। আমার ভাষাটাও তেমন বেঁকে গেছে বলে মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে। যা বলতে চাইছি, সেটা আদৌ বলতে পারছিনা, নিজের মনই কেবল অশান্ত অথচ গতিহীন নৌকোর মতো দুলছে যতিহীন।

ভগবানের দিব্যি। নৌকোটাকে বানিয়েছিলাম বড়ো পরিশ্রমে। ঝড়ে, জলে, রোদুরে। নৌকোটার উপর ঝুঁকে পড়ে একটু একটু করে কুরে কুরে তাকে গড়েছিলাম। কোমর বেঁকে গেছিল আমার। বড়ো গর্বের নৌকো ছিল আমার। নৌকো বানানো শেষ হলে উপরে চেয়ে দেখি জীবনের বেলা পড়ো-পড়ো। সূর্য হেলেছে পশ্চিমে, তাল, ক্যাকটাস, দূর-দিগন্তে পশ্চিম সমুদ্রের জলরাশির উপর ফিকে লালের বিষণ্ণ ছোপ লেগেছে।

এতক্ষণ, এত বছর শুধু নৌকোটার দিকেই চেয়েছিলাম-কখনো নিজের দিকে তাকাবার অবসর পাইনি। নৌকো গড়া শেষ হলে নিজের দিকে চেয়ে দেখি, চল্লিশটা বছর পেরিয়ে গেছে, পাক ধরেছে জুলপির চুলে কালি পড়েছে চোখের কোনায়।

তাতেও দুঃখ ছিল না একটুও, যদি নৌকোটা থাকত। কিন্তু নৌকোটাও থাকল না। তাকে কোনোক্রমেই এই শীতলতার দম্ভময় আবর্তের মধ্যে, অন্ধতার ঝড়ের মধ্যে বাঁচানো গেল না।

সে ডুবে গেলই।

এখন মনে হয় কী বোকা আমি!

সবসময়ই মনে হয়, যখনই এই সমুদ্রের তীরে, পাথরের উপর বসে ভাবি। দূরদিগন্তে জাহাজ। চলে যায়, তীরের কাছে সাদা সিগাল পাখিরা ওড়ে, স্যান্ডপাইপার পাখির চিক গলার স্বর মাথার মধ্যে ভুলে-যাওয়া অনেক বোধের কথা মনে পড়িয়ে দেয়। ঢেউয়ের পরে ঢেউ, আরো ঢেউ, তারপর আরো আরো ঢেউ এসে পাথরে লাগে। আমি ভাবি। একা একা।

একটি দ্বীপের মধ্যে নৌকো-হারানো আমি বসে বসে ভাবিই শুধু। ভাবা ছাড়া আর কিছুই তো করার নেই এখন।

ভাগ্যিস ভাবতে পারতাম! ভাবার ক্ষমতা না থাকলে আমি কী হতাম? কলুর বলদ? ধোপার গাধা?

ভাবছিলাম, ভেঙেই যদি গেল, যদি জানতামই যে ভেঙে যাবে, তাহলে নৌকোটাকে এত যত্ন। করে বানালাম কেন? নৌকোটার দিকেই চেয়ে রইলাম একমনে, জে পিঠের পিছনে বছরগুলো আমলকী পাতার মতো এক এক করে ঝরে গেল–একবার চেয়েও দেখলাম না।

আমি যখন পারাপারের জন্যে আমার সার্থকতার নৌকো গড়ছিলাম তখন কতজন না জানি তাদের নৌকো নিয়ে এসেও ছিল, ডাক দিয়েছিল আন্তরিকভাবে, বলেছিল, উঠে এসো আমার নৌকোতে। তারা বলেছিল, তুমি চিরদিন এই দ্বীপেই রইলে, চলোনা, একটু ঘুরে আসি। কত ঝর্না আছে, হাইবিস্কাস ফুল, রং-বে-রঙা, কত কোরাল-রিফ-কত হু-হু হাওয়া–চোখে-মুখে-চুলে, কত অবকাশের মিঠে স্বাদ এই কাজের নোনা-আবহাওয়া ছাড়িয়ে।

ডেকেছিল, বলেছিল, এসো না। এসো না বাবা! লক্ষ্মীটি এসো।

আমি হাত নেড়ে নেড়ে তাদের তাড়িয়ে দিয়েছিলাম। অনেক অনেকক্ষণ, অনেক বছর তারা তালের আর ঝাউয়ের ছায়ায় অপেক্ষা করেছিল–তার পর এ্যালবাট্রস পাখির মতো তাদের দুধলি-সাদা পালের নৌকোগুলো মন্থরভাবে উড়ে গেছিল সমুদ্রের মধ্যে।

আমি কপাল থেকে ঘাম মুছছিলাম, আর ওদের দিকে করুণার চোখে তাকিয়ে ছিলাম।

করুণা ঠিক নয়, বোধ হয় অনুকম্পার চোখে, ওদের অর্বাচীন ভেবে। ভেবেছিলাম ওরা আমায় বুঝবে। আমার সেই বর্তমানটাকে পদদলিত করা যে ওদেরই ভবিষ্যৎ সুখের জন্যে একথা তারা বুঝবে ভেবেছিলাম। কথা ছিল ওদেরই আমাকে করুণা করার, যদিও কারো করুণার কাঙালই। আমি নই।

তবুও, উলটে আমাকেই ওদের করুণা করতে হয়েছিল।

তখন মনে মনে বলেছিলাম, অপেক্ষমান ওদের দিকে চেয়ে, ওরা ওরকমই। ওরা খালি বেড়াতেই জানে, হাসতে জানে হিহি-হাহা, নাচতে জানে, গাইতে জানে। বলেছিলাম, মেয়েরা ওইরকমই। ওরা খালি নৌকো বাইতেই জানে কারণ ওরা নিজেরা কখনো নৌকো বানায়নি তো নিজে হাতে। বানাতে হয়নি কখনো। ভেবেছিলাম, আমার পরিশ্রমের মূল্য, আত্মবঞ্চনার দাম ওরা দেবে কী করে?

তখন তাই-ই ভেবেছিলাম।

কিন্তু এখন ভাবি, সব নৌকোই তো অবশেষে চড়বার জন্যেই। সমুদ্রের নীচে মাছের ঠোকর খাওয়ার এই নিরর্থক পরিণতির জন্যে তো বানাইনি আমি তাকে, বানাতে চাইওনি কখনো।

অথচ তা-ই হল।

আমার এই ছোট্ট দ্বীপটা যে মূল দ্বীপটার অংশ–মানে যে দ্বীপটা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিলাম অথবা উদ্ভূত হয়েছিলাম আমি, সে দ্বীপের নৃপতি ছিলেন মহাপরাক্রমশালী।

তিনি কিন্তু নিজেও একা ছিলেন। হয়তো আমার মতোই একাই। হয়তো প্রত্যেক পরাক্রমশালী ব্যক্তিই পরম একা।

তিনি নৌকো বানাতেন, নৌকো ভাসাতেন, আর দূর সমুদ্রের নাবিকদের কাছে তা বিক্রি করতেন। তাঁর সবল হাতে বানানো দৃঢ় নৌকোর সুনাম ছিল খুব। তিনি বলতেন, পুরুষরা পুরুষ, নারীরা নারী। যে-পুরুষ নিজে হাতে, নিজের মাথার ঘাম পায়ে না ফেলে, নিজের যৌবনের শক্তি দিয়ে তিল তিল করে নিজের নৌকোনা বানায়, তার সে নৌকো চড়ার অধিকার নেই। যারা

পরের বানানো নৌকোয় চড়ে, তারা পরগাছা। পাবলম্বী, ঘৃণিত। যখন আমার প্রথম গোঁফ উঠেছিল, দুই বাহুতে, দুই উরুতে যখন শক্তি উপচে পড়ছিল তখন আমাকেও নৌকো বানানোর নেশায় পেয়েছিল। সেই নৃপতি প্রৌঢ়ত্বর সীমায় পৌঁছে নৌকো বানানো শুরু করেছিলেন কিন্তু আমি শুরু করেছিলাম প্রথম কুঁড়ি-ফোঁটা যৌবনে।

তফাত শুধু এইটুকুই।

যখন নৌকোটা বানানো শেষ হল তখন সকলে হাততালি দিয়েছিল। সব নৌকোকে পিছনে ফেলে আমার নৌকো চলল তরতরিয়ে। পালে স্বীকৃতির হাওয়া লাগতেই পাল গর্বে ফুলে উঠল। ঈর্ষার ঝোড়ো ও দমকা বাতাসও তাকে কাঁপাতে পারল না।

ভারি সুন্দর করে সাজিয়েছিলাম নৌকোটাকে–কারণ নৌকোটা বানাতে গিয়ে আমি সবই খুইয়ে বসেছিলাম। সর্বস্বান্ত হয়েছিলাম। তাই নৌকোটাকে মনের মতো করে সাজিয়ে অন্য সমস্ত অপ্রাপ্তির দুঃখ ভুলতে চেয়েছিলাম। নৌকোটা ছাড়া এ জীবনে থাকার মতো কিছুই তো আমার ছিল না, যা আঁকড়ে আমি বাঁচতে পারি।

কিন্তু নৃপতি হাততালি দিলেন না।

বললেন, কিছুই হয়নি। পরিশ্রম করনি বাছা একটুও তুমি। নৌকোর বাহার দেখে বললেন এটা বাড়াবাড়ি। বললেন একমাত্র জলদস্যুরাই বা চোরাচালানকারিরাই এমন করে সাজাতে পারে। নৌকো।

সেই মূল দ্বীপের তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন মহাপরাক্রমশালী বৃদ্ধ যা বলতেন ঠিকই বলতেন। যে বিশেষ মেয়েটি নৌকো নিয়ে আমাকে সঙ্গে নিয়ে, তার লতানো দু-হাতে আমাকে হু-হু হাওয়ার মধ্যে চুমুতে ভরে দিতে চেয়েছিল, সেও ঠিকই বলত।

ওঁরা দুজনেই পুরোপুরি ঠিক।

বেঠিক শুধু আমি।

আমি শুধু ভুলই করে এলাম। সারাজীবন ধরে নৌকোটাকে বানিয়েও উপেক্ষা আর অবহেলার আর গৃধুতার পাথরের ধাক্কা থেকে বাঁচাতে পারলাম না তাকে। সে আমার চোখের সামনেই আমার সর্বস্ব নিয়ে তলিয়ে গেল অতলে।

আমি সাঁতরে ফিরে এলাম আবার দ্বীপে-নির্জন দ্বীপে-আমার ছমছমকরা বুকের মধ্যে। এখানে আর কেউই নেই। বড়ো একা।

যখন রাত নামে, যেমন এখন, পাহাড়ের গুহায় গুহায়, তালে ঝাউয়ে, লতায়-পাতায় সামুদ্রিক হাওয়াটা শিষ তোলে। যখন তক্ষক ভয়-পাওয়ানো অমোঘ ডাক ডাকে, ভিজে বালির মধ্যে থেকে বিষাক্ত সাপ ঝিরঝির করে বালি সরিয়ে বালির গভীরে বালিতে ফেরে, যখন আকাশে তারা থাকে না, চাঁদ থাকে না, যখন শুধুই কাজল উড়াল মেঘ, তখন বড়ো ভয় করে আমার।

আজকাল আমারও ভয় করে।

আমি ভাবি, আমিও তো শিশু ছিলাম একদিন। ছিলাম তো? ছিলাম না? বড়ো দ্বীপটা থেকে বিচ্ছিন্ন হবার সঙ্গে সঙ্গেই তো এত শক্ত হইনি। এত বিস্তৃত, এত পদদলিত হইনি। একদিন তো এতকাল নরম কোমল কাদাই ছিলাম। দেবশিশু ছিলাম, সব শিশুরই মতো। নিষ্পাপ, দুঃখহীন, আশাভরা। তখন আমি কাঁদলে নিশ্চয়ই আমাকেও কেউ কোলে তুলে নিত, আদর করত, চুমু খেত।

ছোটোরা যখন বড়ো হয়ে যায় তখনও তারা কাঁদে। কিন্তু যে কান্না শোনা যায় না। কেউই তা শুনতে পায় না। সে কান্না সাইরেনের দ্বীপের মতো একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের বুকের মধ্যের গুহায় কন্দরে ঘোরে। গুমরে মরে। গুমরে মরে। তার বহিরঙ্গ হাসিমুখের আড়ালে শা-শী করে শিষ তোলে সেই কান্নার বাঁশি।

সে তখন নিজেকে বকে, বলে থামো, থামো, এমন করলে পাথরের গুহার মতো শক্ত তোমার বুকটাই হয়তো কখনো বা বিদীর্ণ হয়ে যাবে।

তখন?

যখন নিজের বুকের মধ্যেও আর কান্নাটাকে ধরে রাখতে পারবে না, পারবে না যখন এই একটা দ্বীপের মধ্যেও, তখন কী হবে?

আমার কিছু একটা করার ছিল এই মুহূর্তে, কোথাও একটা যাওয়ার ছিল নিঃসন্দেহে।

এই সফেন, উত্তাল, শীতল, ভুল বোঝাবুঝির সমুদ্র পেরিয়ে, সাঁতরিয়ে, সাঁতরিয়ে সাঁতরিয়ে আমাকে বুঝতেই হবে, আমাকে জানতেই হবে যে, সমুদ্র আছেই, থাকবেই, কিন্তু সমুদ্র কি সত্যিই অশেষ? শেষ কথা?

এই দ্বীপ ছেড়ে, আমার বুকের মধ্যের ভেজা, ঝোড়ো, শিষ-তোলা নির্জনতা ছেড়ে একটা কোথাও আমাকে যেতেই হবে।

যেতেই হবে। কিন্তু কোন দ্বীপে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress