নিশ্বাস রুধে দু চক্ষু মুদে
তাপসের মতো যেন
স্তব্ধ ছিলি যে ওরে বনভূমি ,
চঞ্চল হলি কেন ।
হঠাৎ কেন রে দুলে ওঠে শাখা ,
যাবে না ধরায় আর ধরে রাখা ,
ঝট্পট্ করে হানে যেন পাখা
খাঁচায় বনের পাখি ।
ওরে আমলকী , ওরে কদম্ব ,
কে তোদের গেল ডাকি ।
‘ ঐ যে ঈশানে উড়েছে নিশান ,
বেজেছে বিষাণ বেগে—
আমার বরষা কালো বরষা যে
ছুটে আসে কালো মেঘে । ‘
ওরে নীলজল , অতল অটল
ভরা ছিলি কূলে কূলে ,
হঠাৎ এমন শিহরি শিহরি
উঠিলি কেন রে দুলে ।
তালতরুছায়া করে টলমল—
কেন কলকল , কেন ছলছল—
কী কথা বলিতে হলি চঞ্চল ,
ফুটিতে চাহে না বাক্—
কাঁদিয়া হাসিয়া সাড়া দিতে চাস ,
কার শুনেছিস ডাক ।
‘ ঐ – যে আকাশে পুবের বাতাসে
উতলা উঠেছে জেগে—
আজি মোর বর মোর কালো ঝড়
ছুটে আসে কালো মেঘে । ‘
পরান আমার , রুধিয়া দুয়ার
আপনার গৃহ – মাঝে
ছিলি এতদিন বিশ্রামহীন
কী জানি কত কী কাজে ।
আজিকে হঠাৎ কী হল রে তোর ,
ভেঙে যেতে চায় বুকের পাঁজর ,
অকারণে বহে নয়নের লোর ,
কোথা যেতে চাস ছুটে ।
কে রে সে পাগল ভাঙিল আগল ,
কে দিল দুয়ার টুটে ।
‘ জানি না তো আমি কোথা হতে নামি
কী ঝড়ে আঘাত লেগে
জীবন ভরিয়া মরণ হরিয়া
কে আসিছে কালো মেঘে । ‘