Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » উল্টানো চোখ || Al Mahmud

উল্টানো চোখ || Al Mahmud

এইতো সেই অবসর, যখন কোনো দৃশ্যই আর গ্রাহ্য নয়।
পলকহীন চোখ যেন উল্টে যাচ্ছে। যেখানে থরে থরে সাজানো আছে
ঘটনার বিদ্যুচ্চমক। না, কাউকে ধমক দিতে চাই না।
কোনো কর্তব্য আমার জন্যে নয়। বরং হৃদয়ের ভেতর
যে ব্রহ্মাণ্ডকে বসিয়ে রেখেছি তার গোলক
দ্রুত আবর্তিত হোক।
ভিয়েতনামে বোমা পড়ছে। আমি তার প্রতিবাদ করি।

আমার উল্টানো চোখ যেখানে খুশি ভ্রমণে উদগ্রীব।

এমন কি মেয়েরা যখন কলতলায় শাড়ি পাল্টায়,
আমার চোখ নির্লজ্জের মতো দ্রুত দেখে নেয়।
সাত পাট কাপড় যেখানে কাচের মতো স্বচ্ছ
কে আর আমাকে অন্ধ করতে পারবে?

আমার চোখ দ্রষ্টব্যের উল্টো দিকে ফেরানো
সেখানে ফালতু আবরণ উঠে গিয়ে আসল বেরিয়ে পড়ে।
কেউ বক্তৃতা করলে।
আমি শুনতে পাই না।
বরং বক্তার জিভের ওপর
তার আত্মাকে দেখতে পাই। কেউ সিজদায় নত হলে
আমি দেখি একটি কলস ভরা লোভ উবুড় হয়েছে।

পরিচিত অপরিচিত মেয়েরা এখন আমার সামনে না-আসুক
কারণ তাদের ঢাকাঢাকি বড়ো বেশি। আর
আমার চোখে এখন আবরণের অস্তিত্ব নেই।

এখন আমার মনের মধ্যে রয়েছে এক শিল্পীর একক প্রদর্শনী।
সবাই তার বর্ণলেপনের পারদর্শিতা নিয়ে গল্প-গুজব করুন,
কিন্তু আমি সমস্ত বিমূর্ততাকে ভেদ করে দেখলাম
এক বেকার নিরপরাধ কামুক বেশ্যার বুকে মাথা রেখে কাঁদছে।
যে মেয়েটি বুকে হাত রাখলে খদ্দেরদের ভীষণ ধমকাতো।

আমার ঘরে একজন জাতীয় নেতার ছবি রয়েছে
আমি সেদিকে তাকাতে ভয় পাই।
একবার সেদিকে চোখ পড়লেই ছবিটা
পঁচিশে মার্চের রাত্রি হয়ে যায়।
পারতপক্ষে আমি নিজের ছবির দিকেও তাকাই না।
বিশ্রী রেখাবহুল পোট্রেট। একবার চোখ পড়লেই ছবিটা
কাঁপতে কাঁপতে এক বড়োসড়ো গ্রাম হয়ে যায়।
এঁদো ডোবা। কচুরিপানার ওপর বেগুনি ফুল। নেবুপাতার
ভেতর দিয়ে ধাবমান বাতাস। গোবরের গন্ধ। কোকিল। পাটখেতে
দমবন্ধ গরমের মধ্যে মুল্লাবাড়ির সবচেয়ে রূপসী মেয়েটিকে
চুমু খাওয়া।
এই তো আমার মুখ ভাইসব, এইতো আমার মুখ!
আমার মুখচ্ছবির মধ্যে এইতো চারজন যুবক প্রবেশ করলো।
কচুরিপানার শিকড়ের মতো কালো উজ্জ্বল দাড়ি। দুমড়ানো
পোশাক। যারা সর্বশেষ আহ্বানে হৃদয়ের ভেতর
অস্ত্র জমা রেখেছে। এখন আমার মুখের ভেতর তাদের
গুপ্ত অধিবেশন। যে অতর্কিতে
শহরগুলোকে দখল করা হবে
আমার মুখ তারি রক্তাক্ত পরিকল্পনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *