তোমার গমনপথে অতলান্ত আঁখি মেলে দেখি
কেমন সবুজ আছ তুমি!
এই ভরা নিদাঘের প্রতপ্ত বেলায়
তোমার গহন মায়া সারাটা আকাশ জুড়ে
অদ্ভুত ক্লান্ত চোখে চায়।
কাকেদের জলসায় কৃষ্ণচূড়ার ডাল
হিন্দোলিত হয় বুঝি তোমার আশায়।
তবু তুমি চলে গেলে হায়,
অদ্ভুত অনুভূতি মনের গভীরে প্রলম্বিত হয়,
ঠিক যেন স্পর্শসুখ বেদনার মতো,
কোনো এক বিপন্ন বিস্ময় ছায়া ফেলে যায়,
জীবনের আঙিনায়
নিদাঘের বাতাসের ক্লান্ত এক দীর্ঘশ্বাস মতো।
তার কাছে আরো যদি কোনো এক বিপন্ন সময়,
ঋণ করে পাওয়া যেত, তবু সেই দুপুর বেলায়
মধুর ঘুঘুর ডাক ঝিম ধরা দুপুরের,
সে প্রিয়ার সে আমার ক্লান্ত এক দীর্ঘশ্বাস মতো
সঞ্চারিত হত বুঝি হৃদয়ের আঙিনায়
সৃষ্টিসুখ উত্তাপের স্পর্শসুখ মতো।
হয়ত উদাসী মন থমকাতো কিছুক্ষণ
উদাসী সে দুপুরের উষ্ণতার পারাবারে
প্রিয়ার আদরে।
কখনো বা হৃদয়ের অমোঘ গভীরে
একান্ত আপন করে, সময় ভাসিয়ে দিত
অন্তহীন মিলনের আনন্দ মেলায়।
কখনো হয়না সে তা, তোমার মিলন গাথা
শেষ হয়ে যায়।
তোমার গমনপথে যেতে যেতে থমকানো
কিছু পিছু টান, আর মায়া শবরীর গান
বেজে যায় নিরন্তর, নিস্তব্ধতা খানখান,
তবু ফিরে আসা যেন হয়নাকো আর।
দুপুর গড়িয়ে যায় বিকেল বেলায়
সন্ধ্যার মায়াদীপ অনির্বাণ জ্বলে ওঠে
তারায় তারায়।
রাত ভোর হয়ে যায়, তোমার প্রতীক্ষায়,
তবু দেখা যায় না তোমায়।
আশা তাই নিরাশার মতো সুদূরে মিলায়,
সেই সব তারাদের গায়,
যারাই অদৃশ্য হয় প্রভাত বেলায়।
প্রভাত রবির ছবি, মহাকাল যাত্রাপথে
কখনো বা কোনো এক উদাসী হাওয়ায়
কেন জানি ম্লান হয়ে যায়—-
নেভাদীপ আরবার জ্বলে ওঠে তারায় তারায়।
কালের নিয়মে রাত ভোর হয়ে যায়।
জীবনের মরণের যত টানা পোড়েনের
মহাকাল গতিপথে ক্ষুদ্র বুঝি মানব-বেদনা!
নিয়মের নিষ্পেষণে দাগ দিয়ে যায়
যেন সেই অন্তহীন কালের মায়ায়।
তবু মন ডেকে বলে
যেতে আমি দেব না তোমায়।
সময়ের কালস্রোতে ভেসে চলে যায়
জীবন যৌবন ধন মান
আরো কিছু ব্যথিত বিস্ময়!
স্রোতের আবর্তে হায়, সবই যেন ভেসে চলে যায়
যত কিছু মায়া আর আশা ভালোবাসা
সবই যেন পিছু ডাকে শেষের বেলায়
তবু চলে যেতে হয়,
হে বন্ধু, বিদায়,হে বন্ধু, বিদায়,বলে চলে যেতে হয়।।