জীবনের অনেকটা পথ অতিক্রম করে এসে
সব কিছুই যেন কেমন অর্থহীন মনে হয়।
এই যে আমাদের সমাজ, আমাদের সংস্কৃতি,
বইয়ের আলমারিতে ধুলো মাখা মলিন
নেতাজির তাইহুক থেকে ভারত,
মার্ক্সের ক্যাপিটাল- -আরো যাযা আছে
সব কিছু।
চারদিক প্রচন্ড অবসন্ন, আর ফ্রাস্ট্রেশন।
বহুদূরগামী ঝিঝি পোকার ডাকে
ফ্রাস্ট্রেডেড সময়গুলো পেরিয়ে যাচ্ছে।
পার্টি, উৎসব,মদ,গাঁজা,মেয়েছেলে,
আরো কিছুটা এস্থেটিক সাহিত্য,
অশ্লীল কিছু উপন্যাস, রাজনৈতিক দলাদলি,
চায়ের ঠেকে আড্ডা, আর ভুরি ভুরি গালগল্প –
এই সব দেখে আজকাল আমারও বমি পায়।
কী অর্থহীন! কী প্রচন্ড অর্থহীন আমাদের
বেঁচে থাকা !
দেখেছি এই সবই মিথ্যে, প্রচন্ড মিথ্যে।
দেখেছি যৌনতার কথা শুনে নাক
সিটকানো অদ্ভুত মানুষেরা, সন্ধ্যাবেলা
চুপি চুপি মেয়েছেলে ঘরে ডেকে নেয় ।
মানুষকে দেখে নাক সিটকাতে পারি না।
ভদ্রতার মুখোশ এটে বসে আছি যে,
সেই ভদ্রতার ভেতর দলা পাকিয়ে যায়,
পেট মুচড়ে ওঠে – গলগল বমি করি।
দেখছি,বুঝছি- এই সমস্ত কিছু অর্থহীন।
অর্থহীন সমস্ত কিছু,নাগরিক সভ্যতার
চাষআবাদের অনুর্বর জমি।
আজকাল আর তফাৎ খুঁজি না –
সেটা জংলায় ভরা বা শান দেওয়া
পুকুর ঘাট হোক বা মানুষের
হিপোক্রেসির মধ্যে!
দূর হতে এই দুটোই খুব ভালো সুন্দর
দেখায় এটা বুঝেছি আমি এত বছরে !
চারদিক প্রচন্ড অবসন্ন-
সব কিছুই বড্ড অর্থহীন মনে হয়।
ঘেন্নায় থু থু ছিটাতে ইচ্ছে হয়
এই সভ্যতার সমাজের বুকে,
কিন্তু ওই ভদ্রতা- ভদ্রতা মিশিয়েই
থুথুগুলো গিলে ফেলি।
স্বাধীন নপুংসক নাগরিক হয়ে
দিস্তাদিস্তা কাগজ ভরাই ফিরিস্তি লিখে ।
ঘেন্না ধরে একসময় তারপর ছুঁড়ে ফেলে দেই।
মাথা গরম হলে উদোম খিস্তি করে যাই,
খিস্তির প্রচুর এসথেটিকস৷
রাগে ইদানীং নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ
হারিয়ে ফেলি মাঝেমাঝেই ।
গাঁজা,হিরোইন কিংবা ডেক্সপোটেন প্লাস
খাচ্ছে যে যুবসম্প্রদায় ,তাদের দেখে
নিজের প্রতি করুণা হয় বড্ড ।
স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
এখন শিক্ষা নয় রাজনীতির আখাড়া
না হলে হয়তো এমন হতো না,
কোন গ্রাম্য রাস্তা, পূর্ণিমার চাঁদ,
বা অন্ধকার রাতে জোনাকির আলো
দেখলে আজকাল আর কাব্য আসে না,
না অন্যকিছু লেখার জন্যও না।
কোন কিছুতেই আজকাল আগ্রহ পাই না।
বুঝতে পারি নিজের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে।
শুধু মাত্র আগামী বসন্তের জন্য বেঁচে
থাকাটাই একরকম অর্থহীন মনে হয়।
চারদিক প্রচন্ড অবসন্ন-
সব কিছু যেন কেমন অর্থহীন মনে হয়।