এই বর্ষায় অমন বাসন্তীরঙা শাড়ী
কেমন করে পরলে তুমি!
তবে কি বর্ষায় বসন্তের কিছু মিষ্টি মধুর
আমেজ এনে দিতে চাও!
সুচিরবাঞ্ছিতা, তোমার ভিজে পরশ দিয়ে
আজকে আমায় উদাস করে দাও।
নিশ্চয়ই তুমি জানো
তোমার গমন পথে অযুত তৃষ্ণা নিয়ে
সহস্র মানুষ অনন্তকাল হতে আত্মহারা হয়।
তোমার সে নিম্ননাভী, ক্ষীণকোটি, সুগভীর শ্রোণী,
তোমার চপলা চোখে হরিণী চাহনি,
ডালিম লালিম ঠোঁটে গোলাপী চুম্বনের
মৃদু উন্মাদনা!
হিমালয় নত বুকে আধো উন্মনা যেন ঝর্ণার গানে
চেয়ে আছ দূর নীল নীলিমার পানে
মাটির গন্ধে ভাসো, শুধু হাস, সাড়া দিয়ে বর্ষার গানে,
সেই তুমি, তুমি ছিলে আমাদের মনে, সুচিরবাঞ্ছিতা, এসো আজ প্রাণে।
মানস সুন্দরী তুমি, তুমিই কবিতা, কবি মনে,
তোমাকে খুঁজেছি কত যুগে যুগে জীবনে জীবনে, অনন্ত আকাশ পানে, সপ্তসিন্ধু তানে,
হিমালয় গহ্বর কন্দরে, সুউচ্চ শিখর পানে,
পৃথিবীর প্রতি কোনে কোনে।
সেই তুমি, বাসন্তী রঙা শাড়ী পরে
আজ বুঝি ব্রীড়া অবনতা! কবির কবিতা,
জীবনের হাটে হাটে বিকাও কবিতা!
জলে ভেজা মাধবীলতা।
জানি আমি জানি,
সেই তুমি,
বাসন্তী রঙা শাড়ী পরে ঘনঘোর বরষায়
হিল্লোলিত করেছিলে বসন্তের দিন—।
সে কতদিন—
কতদিন আর, হিসাব রাখিনি তার।
আজ যবে সন্ধ্যা হয়ে আসে বেলা,
পথিকের পথ চলা ক্ষান্ত হয়ে থেমে যায়
ঘনঘোর ধারা বরষায়—
পথপ্রান্তে তরুবীথি তলে,
ক্ষণিক বিশ্রামে তার বেলা বহে যায়
আষাঢ়ের ঘন কালো মেঘ
সারাটা আকাশ ফেলে ছেয়ে।
ধেনু লয়ে ঘরে ফিরে চলে যায় রাখালিয়া ছেলে।
রিমঝিম বৃষ্টির ছাঁদনাতলায়
সৃষ্টির দ্যোতনা জাগে,দিনে,রাতে,প্রভাত বেলায়।
সে এক রোমাঞ্চ জাগে সৃষ্টির শিরায় শিরায়-
উন্মনা মন তাই সুবাসিত হয়-
ভালো লাগে, বড়ো ভালো লাগে মন তোমাকেই চায়।
সেই তুমি, বৃষ্টিরাণী,ক্ষীণ কোটি,সুগভীর শ্রোণী, নিম্ন নাভি, সুবর্তুল স্তন, হরিণী নয়ন নিয়ে
গেয়ে ওঠ জীবনের গান,
বসন্তসেনার মতো, নিয়ে কুহুতান।
সারা রাত, সারা রাত ঝরো তুমি আঝোর ধারায় আজ তুমি জায়া—-
আজ তুমি শুধুই আমার!
নুতনের দ্যোতনায়, সৃষ্টি সুখের এক নব উল্লাসে
ভেসে যায় যাক যত সমাজ সংসার।
আজ তুমি শুধুই আমার।।