Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » স্বেচ্ছা নির্বাসন || Roma Gupta

স্বেচ্ছা নির্বাসন || Roma Gupta

সাবিত্রী বৃদ্ধাশ্রমের জানলা দিয়ে বসন্তের রূপ দেখে নিজের জীবনস্মৃতিতে হারিয়ে যায়। যৌবনের দিনগুলো কতইনা সুন্দর ছিল। নীল দিগন্ত পলাশ শিমুলের আগুন রঙে ছাওয়া; অশোক কিংশুকের খুনসুটির বাসর, কলেজ ক্যাম্পাসে অনির্বাণের সঙ্গে প্রেম আলাপন; তারপর ভাগ্যের পরিহাস। দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবে, স্মৃতিকে ভুলতে চেয়েও কেন পারিনা ভুলতে!
কলেজ জীবনে অনির্বাণের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল সাবিত্রীর।পাশ করার পর শিক্ষিকার চাকরি।আর অনির্বাণের পিতার ব্যবসায়ের কাজ সামলাতে পুণে চলে যাওয়া। মুঠোফোনের চল ছিলনা তখন। চিঠি এবং ল্যান্ডফোন ছিল কথা আদান প্রদানের একমাত্র মাধ্যম।
অনির্বাণ প্রথম প্রথম চিঠির উওর দিলেও, পরে প্রতিশ্রুতি ভুলে চিঠি দেওয়া বন্ধ করে দেয়।
সাবিত্রী অপেক্ষায় থাকে। বাড়ি থেকে বিয়ের চাপ দিলে সাবিত্রী এড়িয়ে যায়।
পুনে গিয়ে অনির্বাণ সাবিত্রীকে ভুলে বিয়ে করে মিত্রাকে।
বেশ কয়েক বছর পর একদিন শপিং মলে গিয়ে সাবিত্রী জিনিস কিনছে, হঠাৎ পিছনে চেনা গলা শুনে চমকে ওঠে। এ তো অনির্বাণের আওয়াজ!
তাকিয়ে দেখে বাচ্চা কোলে দাঁড়িয়ে অনির্বাণ, সঙ্গে স্ত্রী।
নিজেকে সামলে সাবিত্রী বলে, “আপনি অনির্বাণ না? আমাকে চিনতে পারছেন?”
অনির্বাণ – “না ঠিক চিনলাম না! কে বলুন তো?”
সাবিত্রী – আমি সাবিত্রী। শান্তিনিকেতন, বিশ্বভারতীর ইংলিশ অনার্সের স্টুডেন্ট। সম্ভবত আপনি…!
কথা শেষ হওয়ার আগেই অনির্বাণ বলে, ” হ্যাঁ আমিও ওখানে পড়েছি।পাশ করবার পর বাবার বিজনেস সামলাতে পাড়ি পুনায়, তারপর বিয়ে, সংসার”।
সাবিত্রী মৃদু হেসে সৌজন্য বিনিময় করে চলে আসে।
সাবিত্রীর মাথা ঠিক রাখতে পারছেনা। তাহলে তার প্রেম একপেশে ছিল!
জীবনে এমন অমানিশার ছোবল! বেদনার হাতুড়ি আঘাত তার হৃদয় জুড়ে।
ঘরে ফিরে নিরালায় অনেকক্ষণ কাঁদলো। ঠিক করলো বিয়ে করবে না। নিজেকে ব্যস্ত রাখতে টিউশন পড়াতে শুরু করলো।
সময়ের পরিক্রমার সাথে পিতামাতা গত হলে সাবিত্রী বাবার বাড়ি বিক্রি করে ফ্ল্যাটে চলে আসে। দুবছর হলো সাবিত্রী রিটায়ার্ড করেছে।
ভালোই কাটছিলো। প্রতিদিন মর্নিং ওয়াক করে, প্রতিবেশীদের সঙ্গে গল্প করে।
কিন্তু এখানেও অনির্বাণের ছায়া।
একদিন চোখে পড়ে অনির্বাণ ক্যাম্পাসে হাঁটছে।খবর নিয়ে জানতে পারে তার বিল্ডিংয়েই অনির্বাণের ফ্ল্যাট। কোলকাতায় এলে এখানেই ওঠে অনির্বাণ।
সাবিত্রী ভাবে,স্বস্তিতে থাকতে বৃদ্ধাশ্রমই একমাত্র নিরাপদ জায়গা। তাই স্বেচ্ছায় নির্বাসন বৃদ্ধাশ্রমে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress