Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » লোভের পরিণতি || Roma Gupta

লোভের পরিণতি || Roma Gupta

অনেক দিন আগের কথা, রাজস্থানের মরু অঞ্চলে পথভ্রষ্ট পথিকদের জন্য সরাইখানার চল ছিল তখন। বিকানিরের প্রান্তদেশে মেহেরবাঈ- হেমরাজ নামে এক দম্পতি থাকতো। ছেলে-বৌমা, নাতি নিয়ে সংসার। মরুজাহাজ উট নিয়ে মাল সরবরাহ করে রোজগার করতো। একদিন ছেলে পাকিস্তান সীমান্তে মাল সরবরাহ করতে গিয়ে দুস্কৃতিদের হাতে নিহত হয়। বৌমাও পরে ক্ষয়রোগে মারা যায়। একমাত্র বংশধর নাতি তরহেজ দাদু হেমরাজের সাথে কাজে নামে। তরহেজ ছোটো থেকেই খুব চতুর,সব কাজ অনায়াসে করে। অল্প বয়সেই পড়শি কাকা লালমোহনের মেয়ে সুরমার সাথে তার বিয়ে হয়।
একদিন গ্ৰামের এক দাদা রামরাজ কাজের উদ্দেশ্যে আরব দেশে যাবে শুনে তরহেজ বায়না ধরে সেও যাবে।
নাতি নাছোড়বান্দা দেখে ঠাকুরমা বলে সুরমাকেও নিয়ে যাও। ওখানে খাওয়ার কে বানাবে, অসুস্থ হলে কে দেখবে! অগত্যা সুরমা শুদ্ধ চললো রামরাজের সাথে আরবে।
এদিকে মেহেরবাঈ ও হেমরাজ বয়সের ভারে তেমন কাজ করতে পারেনা। উটটাকে ঠিকমত খাবার দিতে পারেনা। দিন দিন উটটা রুগ্ন হচ্ছে দেখে বিক্রি করে দিয়ে সেই টাকায় সরাইখানা খোলে।
পথিকরা এলে জোয়ারের রুটি, সবজি, আচার খাওয়ার দেয়।
পরিপাটি ঘরে থাকার ব্যাবস্থা।
একদিন এক যুবক একটা বড় ব্যাগ নিয়ে রাতের আশ্রয়ের জন্য আসে। রাতে ক্লান্তিতে যুবক অঘোরে ঘুমাচ্ছে। এমন সময় মেহেরবাঈ তার ব্যাগ খুলে দেখে অনেক টাকা ও গয়না। হেমরাজকে ডেকে দেখায়। আত্মস্যাৎ করবার লোভে দু’জনে বালিশ চাপা দিয়ে যুবকটিকে খুন করে রাতেই টেনে অনেক দূরে নিয়ে বালি চাপা দিয়ে চলে আসে।সঙ্গে খালি ব্যাগটাও ফেলে আসে লোকে যাতে ভাবে মরু ঝড়ে আক্রান্ত হয়েছে অথবা দুস্কৃতির কবলে পড়ে মারা গেছে।
তাদের অবস্থার উন্নতি দেখে সবাই সরাইখানা খুলে তাদের লাভ হয়েছে বলে বাহবা দেয়।
মনের মধ্যে লোভ দানা বাঁধায় কোনো পয়সা ওয়ালা অতিথি আসলেই তারা খুন করে সব লুট করে নেয়।
কয়েক বছর পর নাতি তরহেজ ও বৌমা সুরমা দেশে আসবে ঠিক করে।সেইমত তরহেজ বলে আগের থেকে কিছু জানিয়ে হঠাৎ করে যাবো। দাদু ঠাকুমা অবাক হয়ে যাবে।
আরব থেকে দাদু ঠাকুমা’র জন্য অনেক জিনিস কিনে তারা গ্ৰামে আসে। তরহেজ সুরমাকে বলে তুই আজ রাতটা বাপের বাড়ি থাক। এতদিন পড়ে এসেছি আমার যা চেহারা হয়েছে দাদু ঠাকুমা আমাকে চিনতে পারবে না। আমি অচেনার মত যাবো সরাইখানায় আশ্রয় নিতে। তুই পরদিন গিয়ে সব বলে ওদের চমকে দিবি। খুব মজা হবে।
সুরমাকে বাপের বাড়ি পৌঁছে তরহেজ আসে সরাইখানায় থাকতে। যথারীতি দাদু ঠাকুরমা চিনতে পারলোনা এবং মোটা ব্যাগ দেখে লোভে তরহেজ ঘুমালে তাকেও মেরে রাতের অন্ধকারে দূরে নিয়ে গিয়ে বালি চাপা দিয়ে দিলো।
পরদিন সকালে সুরমা এসে পরিচয় দেয় এবং তরহেজের খোঁজ করে। মেহেরবাঈ ও হেমরাজ বোঝে কি সর্বনাশ করেছে তারা। নিজের বংশধরকে খুন করেছে। তবু কষ্ট চেপে বৌমা’কে বলে কই সে তো আসেনি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress