আধেক আকাশ জুড়ে তোমার আভাষ, ঘন নীল নীলিমায় স্থির–
এক পাশে স্থবির কাননে, শিমূলের পলাশের সঘন মিছিল।
আর পারে তারাদের দেশে, মিলেমিশে ব্যাপ্ত দুর্নিবার–
দামোদর, বরাকর স্থির চোখে চেয়ে রয় সুগভীর প্রশান্তিতে ধীর।
মাঝে মাঝে দেখা যায় পাহাড়ের বর্ণময় সবুজের সুউন্নত পীন পয়োধর–
ধরণীর বুকের উপর স্নিগ্ধ মায়া মমতার কখনো সে দুর্নিবার ,
যৌবনের বাসনায় হয়েছে অধীর।
কামনার অতন্দ্র প্রহরে বাতাসের গান, চলে অবিরাম,
রাতজাগা পাখি সব ডানা ঝাপটায় আশায় আশায়,
পিয়ালের পলাশের হরিতকী শিমূলের শাখায় শাখায়,
ছায়াময়,মায়াময়, কুহু কলতান, জ্যোৎস্নায় ভেসে যায়
আকাশের তারা আর জোনাকির মোহময় তান।
নিশীথ গভীর হয় , নক্ষত্রের মায়াজালে মগ্ন চরাচর ,
আধো ঘুমে আধো জাগরণ, হরিণের উচ্চকিত মন,
পুরাণো এ পৃথিবীর আদিবাসী মানুষের টান,
নির্নিমেষে চায় যেন অনাবিল আনন্দের গান, চাঁদিনী এ রাতে
মায়াবীনী নিশিথীনী কুহকীনী নিঃশেষে শুষে নেয় ঈশারায় গড়পঞ্চকোটের প্রাণ, নিজ মহিমাতে।
পঞ্চকোট পাহাড়ের আদিম উষ্ণতায়, জোনাকীরা তরুশাখে প্রদীপ জ্বালায়–
মনে হয় তারা ফুটে আছে যেন গাছেদের গায়।
আরও মনে হয় তারা যেন ফুল হয়ে ফুটেছে বাগানে,
একান্ত প্রাণের টানে, হৃদয়ের অতি কাছাকাছি অতি নির্জনে,
নির্নিমেষে চেয়ে আছি প্রকৃতি প্রেমিক বন্ধু আমরা কজনে।
একদিন আমাদের একদিন শুধুই আপন করা
দুর্নিবার টান, দোয়েলের, কোকিলের, তরঙ্গিত ফিঙেদের অনাবিল গান, ছাতারের ধুলো স্নান,
শালিকের কিচিমিচি, সূর্য বসে পাটে, হয় দিবা অবসান–।
মধুমাসে মধুরসে পরিপূর্ণা বনবালা বনপথে গেয়ে যায় গান, সে গানে প্রাণের টানে
ফুলের সৌরভ আনে নিশিদিনমান।
মুগ্ধচোখে চেয়ে থাকি আমরা কজনে
স্থির হয়ে বসে শুনি সেই বেলা অবেলার ভালোবাসা গান,
ভেসে যাই ডুবে যাই শুনে সেই অনাবিল সবুজের তান।।