অবশ্য সে পথের কুকুর। সারাদিন
এদিকে ওদিকে ছোটে, কখনোবা ডাস্টবিন খুঁটে
জুড়ায় উঠরজ্বালা, কখনো আবার প্রেমিকার
মনোরঞ্জনের জন্য দেয় লাফ হরেক রকম।
হাড় নিয়ে মুখে বসে গাছের ছায়ায়,
লেজ নাড়ে মাঝে-মধ্যে ফুর্তিবাজ প্রহরের, কখনো
ধুলায় গড়ায়। কখনো সে
শূন্যতাকে সাজায় চিৎকারে
আমি বন্দি নিজ ঘরে। শুধু
নিজের নিঃশ্বাস শুনি, এত স্তব্ধ ঘর।
আমরা কজন শ্বাসজীবী।
ঠায় বসে আছি
সেই কবে থেকে। আমি, মানে
একজন ভয়ার্ত পুরুষ,
সে, অর্থাৎ সন্ত্রস্ত মহিলা,
ওরা, মানে কয়েকটি অতি মৌন বালক-বালিকা-
আমরা ক’জন
কবুরে স্তব্ধতা নিয়ে বসে আছি। নড়ি না চড়ি না
একটুকু, এমনকি দেয়াল-বিহারী টিকটিকি
চকিতে উঠলে ডেকে, তাকেও থামিয়ে দিতে চাই,
পাছে কেউ শব্দ শুনে ঢুকে পড়ে ফালি ফালি চিরে মধ্যবিত্ত
নিরাপত্তা আমাদের! সমস্ত শহরে
সৈন্যেরা টহল দিচ্ছে, যথেচ্ছ করছে গুলি, দাগছে কামান
এবং চালাচ্ছে ট্যাঙ্ক যত্রতত্র। মরছে মানুষ
পথে ঘাটে ঘরে, যেন প্লেগবিদ্ধ রক্তাক্ত ইঁদুর।
আমরা ক’জন শ্বাসজীবী-
ঠায় বসে আছি
সেই কবে থেকে। অকস্মাৎ কুকুরের
শাণিত চিৎকার
কানে আসে, যাই জানলার কাছে, ছায়াপ্রায়। সেই
পথের কুকুর দেখি বারংবার তেড়ে যাচ্ছে জলপাইরঙ
একটি জিপের দিকে, জিপে
সশস্ত্র সৈনিক কতিপয়। ভাবি, যদি
অন্তত হতাম আমি পথের কুকুর।