কী করে লুকাবে বলো এই সব লাশ?
এই সব বেয়নেট-চেরা
বিষম নাপাম-পোড়া লাশ?
এ তো নয় বালকের অস্থির হাতের
অত্যন্ত প্রমাদময় বানানের লিপি,
রবারে তুমুল ঘষে তুললেই নিশ্চিত
মুছে যাবে। অথবা উজাড় ঠোঙা নয় মিষ্টান্নের,
কিংবা খুব ক্ষ’য়ে-যাওয়া সাবানের টুকরো,
অথবা বাতিল স্পঞ্জ, দূর
ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দিলেই বেবাক
চুকে-বুকে যাবে।
কী করে লুকাবে বলো এত বেশি লাশ?
জানতে কি তোমরা
এত লাশ আপাদমস্তক মুড়ে ফেলবার জন্যে
ক’ হাজার গজ
লাগবে মার্কিন
পোড়াতে ক’ মণ কাঠ? তুখোড় চাতুর্যে
ভেবেছিলে এই সব লাশ গাদাগাদি
মৃত্তিকায় পুঁতে রাখলেই
অথবা নদীর স্রোতে ভাসিয়ে দিলেই বেপরোয়া
তোমাদের হত্যাপরায়ণ
দিনরাত্রি মুছে যাবে বিশ্বস্মৃতি থেকে।
যখন রাস্তায় জঙ্গি ছুটে যায়,
আগলে দাঁড়ায় পথ মৃতদের ভিড় সবখানে-
নিরস্ত্র নিরীহ যারা হয়েছে শিকার
মেশিনগানের, মর্টারের। অশ্বারোহী
যেন ওরা, হাওয়ায় সওয়ার,
আবৃত সুনীল বর্মে, পেতে চায় করোটির ট্রাফি।
আদালতে, সরকারি দপ্তরে
বেরোয় দেয়াল ফুঁড়ে অবিরল গুলিবিদ্ধ লাশ,
ঝুলে থাকে গলায় গলায়।
দোকানি সম্মুখে মেলে দিলে
কাপড়ের থান,
আলোকিত পরিপাটি মেঝেতে গড়িয়ে পড়ে লাশ;
যেনবা লুকিয়েছিল কাপড়ের ভাঁজে।
অথবা বিদেশী প্রতিনিধিদের ভোজসভায় হঠাৎ
প্লেটে ডিশে চিকেন সুপের পেয়ালায়
ন্যাপকিনে নিহত পুরুষ, নারী, শিশু
উদ্ভিদের মতো লেগে থাকে সারাক্ষণ,
রক্তাক্ত নাছোড়।
কী করে লুকাবে বলো এত বেশি লাশ
শোকার্ত মাটির নিচে, গহন নদীতে?