ব্রহ্মা প্রথমে পুরুষ সৃষ্টি করেছিলেন।
পুরুষ সৃষ্টি করার পর তার হাতে কোন উপাদান ছিলো না
যা দিয়ে নারী সৃষ্টি করা যায়।
সুতরাং তিনি বললেন : বাতাস থামো তোমাকে দরকার
বাতাস থামলো।
নদীকে বললেন, নদী দাঁড়াও, তোমার শরীর থেকে
দুটো ঢেউ আমাকে দাও।
ফুল থেকে পাপড়ি
পাপড়ি থেকে রঙ
মাটি থেকে সহ্যক্ষমতা
ময়ূরের থেকে অহংকার
সাপের থেকে ছোবল
মেঘের থেকে মনখারাপ—এইসব উপাদান সংগ্রহ করে
ব্রহ্মা নারী সৃষ্টি করলেন।
সৃষ্টি করে ব্রহ্মা পুরুষকে ডাকলেন, কি তোমার পছন্দ একে?
এতোদিন নিঃসঙ্গ নদীর তীরে বসেছিলে
একে সঙ্গে নিয়ে যাও।
অর্থাৎ আমি মেয়েটিকে নিয়ে চলে এলাম গহন অরণ্যে ।
মেয়েটির চুল স্পর্শ করতে গিয়ে দেখি হু হু করা বাতাস
নদী দিয়েছিল ঢেউ, কই সেই ঢেউ?
কোথায় পাপড়ি? কোথায় মাটি?
রাত্রিবেলায় আমি তাকে বললাম দেখি কোন অংশটা তোমার
ময়ূরের মতো? কোথায় ছোবল?
কোথায়, ঠিক কোথায় মনখারাপ?
আমি কিচ্ছু পেলাম না, সব মিথ্যা, সাতদিন বাদে
মেয়েটিকে ফেরত দিয়ে এলাম।
কিন্তু তিনটে রাতও কাটাতে পারলাম না একা,
মেয়েটিকে আবার নিয়ে এলাম
বন্ধুরা বললো, বৃষ্টির দিন আজ, ওকে ঝাউবনে নিয়ে যা
ময়ূরের মতো অহংকারী নৃত্যে মিলিয়ে গেল ঝাউবনে
আমাকে গ্রাহ্য করলো না।
দু’রাত্রি বাদে ফিরে এলো
আরো রহস্যময়ী হয়ে, চোখে তখন তার নতুন একটা ভাষা
দু’রাত্রি বাদে কোনো মেয়ে বাড়ি ফিরে এলে
কোন মেয়েকেই ভালো লাগে না।
কিন্তু মেয়েটিকে নিয়ে যেতে এলেন স্বয়ং ব্রহ্মা, বললেন,
একটি উপাদান ওর শরীরে নেই, বিষণ্ণতা
বিষণ্ণতাছাড়া কোন নারী সম্পূর্ণ হয় না।
আমি বললাম, এ কিরকম একটা মেয়ে তুমি আমাকে দিয়েছো
আমাকে ভালোবাসে না, হঠাৎ হঠাৎ আমাকে ছেড়ে চলে যায়
ফিরিয়ে নাও, আমি মুক্তি চাই।
মুক্তি চাই ঠিক, কিন্তু তুমি ওকে নিয়ে গেলে কথা বলবো কার সঙ্গে?
রাগ করবো কার ওপর, ঝাউবনে ঘুরে বেড়াবো কি নিয়ে?
আমি তবে কি নিয়ে থাকবো?