Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » আমার এলিজি || Subodh Sarkar

আমার এলিজি || Subodh Sarkar

ব্যালকনি থেকে ঝাঁপ দিয়ে নেমে পড়লাম তুলো আর ইথারের দেশে
ভাল মনে নেই
শেষ কবে আমি এখানে এসেছি, চেরিফুল ছিল
রাশি রাশি, আজ
তারা প্রিন্ট হয়ে বাচ্চা ছেলেদের গায়ে উঠে গেছে।
দৃশ্য খুব কম, খানিকটা মাঠ
টেনিসের কোর্ট ছিল, ধারে ধারে টব, রেলিং গ্যালারি
সব উঠে গেছে স্টেডিয়ামে
আজ নেট ছিঁড়ে বেঁধে আছে গাছে
তাকে ধরে রোদ পেঁচিয়ে উঠছে ডালে, আর
একটা পায়রা, সংরক্ত
গোল করে ঘিরে আরও তিনটে পায়রা
হেঁটে যায়, বন্ধ করুন ঈশ্বর
আপনি এ দুপুর আমাদের চিলেকোঠা থেকে নিয়েছেন।
বাতাস দরজা খুলে দিল, ভয়ে ভয়ে ঢুকে দেখি ছেঁড়া চেন
বাটি উলটো করা— ভোলা পালিয়েছে
বারান্দায় সাদা কাপড় টাঙানো
এরকম মেঘ বিধবা মায়ের জন্য
কে রেখে গেছেন, বলা মুশকিল, অল্প উড়ছেও
ছোট বোন কলেজে কি?
সে তো এক ছোকরার সাথে বিহারের দিকে চলে গেছে
বনে বনে ঘুরে ক্লাস নিত
তার কথা কেন?
সিঁড়ি দিয়ে উঠে এসে দেখি কুয়োতলা, মনে পড়ে গেল
কুয়োর ওপরে ছোট নীল রঙের একটা বাল্ব জ্বেলে দিতাম আমরা
সেটা কই? যে পাখিটি আসত
সে কি খুলে মুখে করে নিয়ে গেছে ডিম ভেবে
কুয়োতলা!
এর পারে বসে আজও আমাকে কেউ জামা কেচে দেয়
আর ফিসফিস করে দড়ি বালতি
ছেড়ে দেয় কুয়োর ভেতর।
শেষ কবে আমি এখানে এসেছি, মনে নেই
জড়ো করে রোদে দিত বিছানা বালিশ
বাড়ির এসব কাজ মিনুদের ছিল, ওরা এখন অন্যের
ঘাস উঠে ঢেকে দিচ্ছে সেই শয্যা
কোত্থেকে একটি মাছরাঙা
উড়ে এল, শোনো
এইদিকে বিল নেই, বাড়ি
তুমি ভাতজাংলার লেকে উড়ে যাও—
প্রচুর কচুরি পাবে, মেঘলা দিনও আছে, রাত্রে জ্যোৎস্নায়
মাছ ধরে গাছে বসে খাও।
রেডিয়ো ছিল না?
মঞ্জরির থোকা, ছিল
একদিন আমি আর বোন, বাজছে না দেখে
ফেলে এসেছি জঙ্গলে
এক যুগ পরে, আজ, মাঝেমধ্যে বাজে, ওই বনে, একসঙ্গে
তিন-চারটে সেন্টার, বেতার কি হিরন্ময়, কি মৌচাক
সারাক্ষণ ওইখানে তিনটে শালিক উড়ছে
তাদের একটি ভুল করে, আজ
ভাত খেতে এল লেবুতলায়, যেখানে
বাসন নামিয়ে দেবুর মা গেছে ছাই আনতে, আমি বলি:
‘মাত্র ক’খানা বাসন, নিজেরাই মাজলে পারো?’
যদি উনি থাকতেন, মিনু তুই ছাদে উঠে
চুল আঁচড়াবার সাহস পেতিস?
মেজো ভাইটার কথা মনে নেই?
মুরগি চালান দিত হাটে, যেদিন সে তোমাদের ছেড়ে
চলে যায়, তার এক ঝুড়ি মুরগি ডালা ছিঁড়ে উড়ে বসল জঙ্গলে
জঙ্গল না, ঝোপ, যেটা একটা থালার মতো
সমস্ত মুরগি নিয়ে উড়ে গেল পৃথিবীর থেকে
মনে হল লাল তারামালা, কেবল ছুটছে, আর ডাকছে
আর তুমি নিজে
যাকে ভালবাসো, ভুলিয়ে অসীমে নিয়ে গিয়ে
তার শরীরের থেকে একটা একটা করে পাতলা কাগজ
খুলে আকাশে উড়িয়ে দাও
পরিবর্তে একটা মালতী দাও চুলে, আর মুখ দিয়ে
শব্দ করো: উঃ উঃ…
বাড়ি থেকে অল্প দূরে, এই কবিতায়, যে লনের কথা
বলতে পারিনি
দেখি সেখানে একটি অমল ছাগলছানা ঘাস খেতে এসে
আর যেতে চাইছে না
যাও ওগো রাই বাড়ি ফিরে যাও
এখানে দেবদূতেরা বসে বিশ্রাম করেন
তুমি জানছ না, তুমি বাড়ির সামনে এই লনটিকে কত
জনপ্রিয় করে রেখে গেলে?
স্বপ্নে এক মেয়ে আছে, সে আমার
তার ওড়না আমার
নূপুর আমার, যদি বাজে
নাম ঝুমা,
গামছা সাবান এনে রেখে যাচ্ছে, ওই ডোবাটায়
দেবতারা স্নান করে যান
ডোবাটার চারপাশে ওরা গোল হয়ে বসে গা মোছেন
বাড়ি থেকে মনে হয়
দশখানা তারা আকাশের থেকে নেমে এসে কেবল নড়ছে।
কুকুরের রোগা বাচ্চা,
মহাজগতের থেকে ধরে এনে
যাকে আবার পুষছি
সে ককিয়ে ডেকে ওঠে একবার, ঝুমা
দৌড়ে ফিরে যায় স্বপ্নে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *